ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমর। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজাপুর ডাক বাংলো মোড়ে ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে
ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমর। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজাপুর ডাক বাংলো মোড়ে ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে

কী নির্বাচন পাতছে, এটা তো কোনো নির্বাচন না: শাহজাহান ওমর

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠি-১ আসনে (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) নৌকার প্রার্থী হওয়া মুহম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তম বলেছেন, ‘এবারকার নির্বাচন, কী নির্বাচন পাতছে, এটা তো কোনো নির্বাচন না। আরে ব্যাটা, নির্বাচনে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে, ভালো প্লেয়ার না থাকলে, উভয় পক্ষের মিছিল–মিটিং, মাইকিং-স্লোগান না থাকলে সেই নির্বাচনে মজা নাই। যা–ই হোক, এটা তো শেষ না।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর ডাকবাংলো মোড়ে ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে গত সোমবার উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সভা করে শাহজাহান ওমরের পক্ষে নির্বাচনে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বরিশাল শহরের বাসভবনে এক বৈঠকে শাহজাহান ওমরের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়। দ্বন্দ্ব অবসানের পর আজ কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।

শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আমি আপনাদের এই দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। আমি আশা করব, আমাদের সুযোগ্য লার্নেড ফ্রেন্ড সরফরাজ (উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এইচ এম খায়রুল আলম) সাহেবের নেতৃত্বে আপনারা সকলে আমাকে এবং আমার সাবেক দলের যারা নেতা-কর্মী আছে, আপনাদের রুমের ছোট একটু জায়গায় স্থান দেবেন। আমরা আমার সাবেক দল, আপনাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে আপনাদের দলকে আরও সমৃদ্ধিশালী করতে চাই। উন্নত থেকে উন্নততর করতে চাই। তার এক্সাম্পল আশপাশে সমস্ত থানায়, জেলায়-উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে।’

শাহজাহান ওমর আরও বলেন, ‘রাজনীতিতে হৃদয়টা বড় করতে হয়, সংকীর্ণ মন নিয়ে রাজনীতি হয় না। একটা ছেলে ভুল করতে পারে, অ্যাডজাস্ট করার মানসিকতা থাকতে হবে। আমি তো বিএনপি করতাম, আওয়ামী লীগের অনেকে আমার দল করত, পারসোনাল রিলেশনের জন্য। আবার এখন আমি আওয়ামী লীগে, বিএনপির কিছু লোক আসবে, ওদের ঘৃণা করে ফেলে দিলে আপনার দল দুর্বল হবে। আমরা আরও শক্তিশালী হতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, সরফরাজ সাহেব যে কথা বলেছেন। উনি আমার সাবেক দলের লোকজনকে গ্রহণ করবেন, যেভাবে আজকে আমাকে গ্রহণ করেছেন। আপনি দয়া করে আপনার ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও অন্যান্য যে ইউনিট আছে, ওদের নির্দেশনা দিয়ে দেন যে উপযুক্ত লোক যদি আসতে চায়, গ্যাঞ্জাম পার্টি আমিও চাই না। যারা সম্মানিত, উপযুক্ত, দেশদরদি, রাজনীতিমনা আসতে চাইলে দয়া করে ঠাঁই দেবেন।’

বিদেশিদের নিয়ে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ধিক্কার জানাই, বিদেশি বদমাইশরা আমাদের উপদেশ দেয়। আরে হালা যুদ্ধ করিয়া, মানুষ মারিয়া দ্যাশ স্বাধীন করলাম। বিদেশি শকুন এসে আমাদের উপদেশ দেয়, এটা করেন, ওটা করেন, সেটা করেন। এই দেশে কোনো মড়ক নাই, তাই শকুনদেরও কোনো স্থান নাই। আমরা নিজস্ব উদ্যোগে যতটুকু পারি, হতে পারি আমরা কিছুটা অনুন্নত, আস্তে আস্তে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত থেকে উন্নততর হব।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জিয়া হায়দার খানের সঞ্চালনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বাচ্চু মৃধা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেলা তিনটার দিকে রাজাপুর গোডাউন ঘাটে শাহজাহান ওমরের বাসভবনে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।