দুই বছর আগে খুলনায় ওয়ার্ড বিএনপির একটি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের ৭৫ নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে। মামলায় খুলনা সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় আরও ৫০ থেকে ৬০ জন অজ্ঞাতপরিচয় নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। আজ বুধবার নগরের খালিশপুর থানায় মামলাটি করেন নগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস শেখ। তাঁদের বিরুদ্ধে ওয়ার্ড বিএনপি অফিস ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার পরিদর্শক তদন্ত আশীষ কুমার মৈত্র।
৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম মামলা। মামলায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ খালিদ আহম্মেদ, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খুরশিদ আলম, ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তালাত হোসেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহিদুর রহমান, খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার, সদর থানা আওয়ামী লীগ ও খুলনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, খুলনা নগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাজালাল সুজন, খুলনা ব্রজলাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিশাত ফেরদৌস প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি অফিসের সামনে আসে। এরপর তাঁরা তালুকদার আবদুল খালেক, এস এম কামাল হোসেন, বাবুল রানা, সদর থানার সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনের নির্দেশে হাতবোমা নিক্ষেপ করেন। আসামি সাইফুল ইসলাম তাঁর হাতে থাকা শটগান দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। একটা পর্যায়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদের নির্দেশে আসামিরা বিএনপি অফিসের দরজা ভেঙে ভেতরে থাকা আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। সাবেক কাউন্সিলর তালাত হোসেন সবার আগে ভেতরে ঢুকে ১২ হাজার টাকা ড্রয়ার থেকে লুট করেন। যাওয়ার সময় আসামিরা আবার অফিস ভাঙচুর করেন।
মামলার বাদী ইলিয়াস শেখ বলেন, ‘ওই সময় থানায় মামলা করার চেষ্টা করা হলেও ব্যর্থ হয়েছিলাম। তাই এখন মামলাটি করা হয়েছে।’