দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, দোকান ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, ইউপি চেয়ারম্যান, দুজন সাংবাদিকসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করা হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে ঘোড়াঘাট থানায় পৌর ছাত্রদলের সদস্য সহিদ শেখ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ঘোড়াঘাট পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আখতার, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান শিমুল, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন, পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর রাহাদ আহাম্মেদ, আওয়ামী লীগের কর্মী শফিউল আলম, পালশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কবিরুল ইসলাম প্রধান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইফতেখার আহম্মেদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার, দৈনিক আমার সংবাদ-এর ঘোড়াঘাট প্রতিনিধি নবিরুল ইসলাম ও দৈনিক যুগের আলোর ঘোড়াঘাট প্রতিনিধি কাজী নাছির।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৪ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে ঘোড়াঘাট পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডে চারমাথা পাকা রাস্তা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম আখতার, মুরাদ হোসেন, আসাদুজ্জামান শিমুল, শেখ বদিউজ্জামান, শফিউল ইসলাম, বেল্লাল হোসেনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র ও পেট্রল বোমা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পথরোধ করেন। এ সময় আসামি আসাদুজ্জামান শিমুল তাঁর হাতে থাকা পেট্রল বোমা শিক্ষার্থীদের ওপর নিক্ষেপ করেন। এতে কয়েকজন আহত হন।
এ সময় অপর আসামিরা লাঠি ও রড দিয়ে সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়ে তাঁদের মারধর করে। একপর্যায়ে আসামিরা বাদী সহিদ শেখ ও তাঁর সঙ্গে থাকা মো. রাফিকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে আসামিরা ঘোড়াঘাট বাসস্ট্যান্ডে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুর করে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ছাড়া আসামিরা সেখানে মাসুদ রানার মোটরসাইকেল গ্যারেজে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই গ্যারেজে থাকা সাড়ে ৪ লাখ টাকা দামের দুটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনকে মারধর, অগ্নিসংযোগ, ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।