ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় পুলিশের হাত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছেন স্বজনেরা। এ সময় আসামির পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৯ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
উপজেলার পিংড়ি এলাকায় আজ শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামির নাম জহিরুল ইসলাম ওরফে সোহেল (৪৮)। তিনি ওই এলাকার ফজলুল হক মাস্টারের ছেলে ও ঝালকাঠি জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। ঘটনার পর থেকেই পলাতক আছেন জহিরুল।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে আজ সকালে জহিরুল তাঁর বাড়িতে জাকাতের কাপড় বিতরণ করছিলেন। এ সময় রাজাপুর থানার পুলিশের একটি দল এসে একটি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি জহিরুলের হাতে হাতকড়া পরালে পরিবারের লোকজন বাধা দেন। একপর্যায়ে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় জহিরুলকে। এরপর তিনি হাতকড়াসহ পালিয়ে যান। ধস্তাধস্তিতে পুলিশের দুই এএসআই মো. নুরুজ্জামান ও মো. রেজাউল এবং সদস্য মো. জাকির আহত হন। পরে থানা থেকে পুলিশের আরও ফোর্স পাঠানো হয়। আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার অপরাধে ওই বাড়ি থেকে আটজন নারী ও একজন পুরুষকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তবে থানা থেকে তাঁদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী পিংড়ি এলাকার ছাত্রদলের কর্মী নাজমুল হাসান ও মেহেদী হাসান বলেন, জহিরুল পুরোনো একটি রাজনৈতিক মামলার আসামি। এ মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে এলে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাদের (পুলিশ) ধস্তাধস্তি হয়। এই ফাঁকে জহিরুল হাতকড়াসহ পালিয়ে যান। পরে লোকজনের মাধ্যমে হাতকড়াটি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলক চন্দ্র রায়ের দাবি, আসামিকে তাঁর স্বজনেরা ছিনিয়ে নিলেও তাঁর হাতে হাতকড়া পরানো ছিল না। তিনি বলেন, জহুরুলকে হাতকড়া পরানোর আগেই তাঁর স্বজনেরা পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের দুই কর্মকর্তা ও এক পুলিশ সদস্য আহত হন। আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় আনা হয়েছে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। অনেকটা একই রকম তথ্য জানান জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া সার্কেল) মো. মাসুদ রানা।