আওয়ামী লীগের ‘শান্তি’ সমাবেশের কারণে টাঙ্গাইলে নির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চের বহর। আজ রোববার বিকেল চারটায় ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার করাতিপাড়ায় গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ করার কথা ছিল।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ একই সময়ে করাতিপাড়ায় ‘শান্তি’ সমাবেশ করায় রোডমার্চের বহর সেখানে না থেমে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ওই এলাকা অতিক্রম করে। পরে তারা শহরের অদূরে সন্তোষে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় সেখানেও ছাত্রলীগ কর্মীদের মহড়া দিতে দেখা যায়।
মাওলানা ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা রোডমার্চ করছি গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর—এসব ব্যাপারে মানুষ যে ঐক্যবদ্ধ, সেটা সরকার বুঝতে পারছে। তাই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ভয় পাচ্ছে। নানাভাবে কর্মসূচিতে বাধার সৃষ্টি করছে।’
করাতিপাড়ায় সমাবেশ করতে না পেরে রোডমার্চ সেখানে না থেমে ওই এলাকা অতিক্রম করে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রোডমার্চের বহর টাঙ্গাইল পৌর এলাকার সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজারে যায়। সেখানে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ভাসানীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া করে। এ সময় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা মাজার এলাকায় অবস্থান নেন। তাঁরা সেখানে হইচই শুরু করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা মাজার এলাকা থেকে বাইরে চলে আসেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা একটি রোডমার্চে আছি। আমরা সফরকারী। সফরে থাকতে আমরা একটা কর্মসূচির জায়গা ঠিক করেছি। পুলিশের দায়িত্ব আমাদের সেই জায়গায় নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেখানে “শান্তি” সমাবেশ ঘোষণা করে। সেখানে পুলিশ তাদের সহযোগী ছিল। আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। অন্যত্র তারা স্থান ঠিক করে দিক। পুলিশ সে বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করেনি।’
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি ছিল ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের। সেটা করেছি। সেখানেও দেখেছি, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়েছে। নানা দিক থেকে একটা হুমকির পরিস্থিতি তৈরি করে রাখা হয়েছে। যেহেতু মওলানা ভাসানীর কবর জিয়ারত, দোয়া ও শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়। তাই ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখার বিষয়ে আমরা সচেতন ছিলাম।’
১৫টি মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে রোডমার্চে অন্যান্যের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ ‘শান্তি’ সমাবেশ ডাকলেও তারা করাতিপাড়ায় কোনো সমাবেশ করেনি। বিকেলে ওই এলাকায় তিন শতাধিক আওয়ামী লীগ কর্মী অবস্থান নেন। গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চের বহর ওই এলাকা অতিক্রম করার পর তাঁরা সেখান থেকে চলে যান। এ সময় নেতা–কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ওরফে গাউস ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিক।