গাজীপুর সিটি নির্বাচন

আইন মেনে প্রচারণার প্রতিশ্রুতি আজমতের, জায়েদা চাইলেন সুষ্ঠু ভোট

প্রতীক বরাদ্দের সময় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের সঙ্গে ছিলেন দলীয় নেতারা
ছবি: প্রথম আলো

উত্সবমুখর পরিবেশে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণায় নেমেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে স্থাপিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়। সেখানে কাঙ্ক্ষিত প্রতীক পেয়ে প্রার্থীদের কেউ কেউ স্লোগান দিতে দিতে দলীয় কার্যালয়ে যান, কেউ কেউ ফেরেন এলাকায়।

গাজীপুর সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক পাওয়ার পরই আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

আজ সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীক বরাদ্দ নেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আলিম উদ্দিন ও আবদুল হাদী শামিম।

প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আজমত উল্লা খান বলেন, ‘প্রতীক পেয়েছি, তাই এই বঙ্গতাজ অডিটরিয়াম থেকেই আমার প্রচারণা শুরু করছি। অবশ্যই আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকব। দেশের প্রচলিত যে আইন আছে, সেই আইন মেনে আমরা আমাদের প্রচারণা চালাব।’

আজমত উল্লা খান আরও বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সম্মানিত ভোটারদের প্রতি আকুল আহ্বান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে একটি সমৃদ্ধ সিটি করপোরেশন হিসেবে গড়ে তুলতে এবং নাগরিক সুবিধা ও আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে যেন সহযোগিতা করেন।’

প্রতীক বরাদ্দের সময় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের সঙ্গে ছিলেন ছেলে জাহাঙ্গীর আলম

প্রতীক নিতে মায়ের সঙ্গে এলেন জাহাঙ্গীর

বেলা পৌনে ১১টার দিকে বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে আসেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। মায়ের হাত ধরে জাহাঙ্গীর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তার হাত থেকে প্রতীক বরাদ্দ নেন। জায়েদা খাতুন পেয়েছেন টেবিলঘড়ি প্রতীক।

প্রতীক নিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় জায়েদা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘লটারিতে টেবিলঘড়ি মার্কা পেয়েছি। আমি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সবার কাছে ভোট চাই। আপনারা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের জন্য ঘড়ি মার্কায় ভোট দিবেন।’

জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি লড়াই করছি জনগণের জন্য। আমার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের জনগণ রয়েছে। আমি আমার ও ভোটের নিরাপত্তা চাই, সুষ্ঠু ভোট চাই। আমি নির্বাচন কমিশনারের কাছে একটা সুষ্ঠু ভোট চাই।’

নির্বাচনে জয়লাভ করলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘এই শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ। আমি জয়লাভ করলে আগে এই রাস্তা ও ড্রেনেজ করব।’

এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে গ্রাম থেকে শহরে রূপান্তর করতে চেয়েছিলাম। সেই কাজে হাতও দিয়েছিলাম। এখন মায়ের পাশে থেকে সেসব কাজ করে যেতে চাই।’

প্রতীক বরাদ্দে লটারি

টেবিলঘড়ি প্রতীক চেয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম ও জায়েদা খাতুন। সকালে যখন শাহনুর প্রতীক চেয়েছিলেন সে সময় জায়েদা খাতুন উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর অনুপস্থিতিতেই নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম লটারির আয়োজন করেন। লটারিতে জায়েদা খাতুন টেবিলঘড়ি প্রতীক পান। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনুর হাতি প্রতীক চেয়ে নেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, একই প্রতীক একাধিক ব্যক্তি চাইলে নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের লটারির মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। লটারিতে জায়েদা খাতুন টেবিলঘড়ি প্রতীক পেয়েছেন।

সিটি নির্বাচনে মোট আটজন মেয়র পদে লড়ছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে আজমত উল্লা খান দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। এ ছাড়া গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম মাছ, জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন লাঙ্গল ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন টেবিলঘড়ি, সরকার শাহনুর ইসলাম হাতি, রাজু আহম্মেদ গোলাপ ফুল ও হারুন অর রশিদ ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬। ৫৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৩৯ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৯টি পদে ৭৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রার্থীরা আজ থেকে আচরণবিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।