ফরিদপুরের মধুখালীতে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে যৌথভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আজ শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে ফরিদপুর শহরের আলীপুর মোড়ে মুজিব সড়কে আয়োজক সংগঠনের জেলা কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রতিবাদ সমাবেশে একটি ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন নেতা-কর্মীরা। এর আগে শহরের বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দলে দলে দুই দলের সমর্থকেরা সমাবেশে উপস্থিত হন। ইসলামী আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক লোকমান হোসেন জাফরী।
লোকমান হোসেন জাফরী বলেন, ‘আমরা শুনেছি, আগুন দেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী প্রথমে ওদের (শ্রমিক) সন্দেহ করে স্কুলের একটা কক্ষে আটকে রাখেন। কিন্তু তাঁরা মারধর করেননি। ইউপি চেয়ারম্যান এসে তাঁদের মারধর শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি, হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান হুকুমের আসামি করা হোক। পাশাপাশি দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ঘটনার এত দিন পরও কীভাবে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য গ্রেপ্তার হয় না। আমরা দ্রুত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
খেলাফত মজলিসের জেলা শাখার সভাপতি মো. আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘ঘটনার পর ডিসি সাহেব আমাদের ডেকেছিলেন। সেই সভায় ধর্মমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, দুই দিনের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে; কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।’
সমাবেশে বক্তারা সরকারের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে; নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে তাঁদের চেহারা উন্মোচন করতে হবে।
বেলা দুইটার দিকে শুরু হওয়া সমাবেশ শেষ হয় সাড়ে তিনটায়। সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বোতলজাত পানি বিতরণ করা হয়। এতে ইসলামী আন্দোলনের জেলা শাখার সহসভাপতি শামসুল হক, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামসুদ্দিন মোল্লা, ভাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি আবদুল হান্নান মাতুব্বর, মধুখালী উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।