কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি বেড়ে ফসলি খেত ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রোববার সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে আবারও সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গাধর, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি তিন দিন ধরে বেড়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চরাঞ্চলের নিম্নভূমি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রোপা আমন ২৮৫ হেক্টর ও ৫০ হেক্টর সবজিখেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বড় ধরনের কোনো বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।

আজ রোববার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৭০ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে ৭৮ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৯০ সেন্টিমিটার ও তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের রসুলপুর চরের বাসিন্দা মাইদুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ থেকে দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করেছে। এতে রসুলপুর চর, প্রথম আলো চর, রাউলিয়া চর এলাকায় ১০ হেক্টর আমন ধান পানিতে ডুবে গেছে। ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে করে ডুবে যাওয়া ধান পলির নিচে তলিয়ে যাবে। বর্ষা মৌসুমের শেষ সময়ে বন্যা হলে কৃষকের ক্ষতির আশঙ্কা আছে।

নৌকা নিয়ে গন্তব্যে ছুটছেন তাঁরা। রোববার সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ এলাকায়

গত মাসে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নিচু ভূমিতে কিছু আমন ধানের বীজ ছিটিয়েছিলেন যাত্রাপুর ইউনিয়নের অষ্টআশির চরের কৃষক আজিজুল হক। তিনি বলেন, কয়েক দিন থেকে ভারী বৃষ্টিতে তাঁর সব সব ধানখেত ডুবে গেছে। এবার বড় বন্যা দেখা না দিলেও দেড় মাস ধরে বন্যার পানিতে নিচু জমি ডুবে আছে। এ কারণে ডাল ও বাদাম চাষ পিছিয়ে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই মাসে কুড়িগ্রামে সর্বশেষ বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় কৃষকেরা রোপা আমন চাষ শুরু করেন। কিন্তু কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ২৮৫ হেক্টর রোপা আমন ও ৫০ হেক্টর সবজিখেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।