কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালীর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির–সংলগ্ন এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ৯টি অত্যাধুনিক সামরিক গ্রেনেড উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়া গ্রেনেডের মধ্যে চারটি আরজেস হ্যান্ড গ্রেনেড ও পাঁচটি এম-সিক্স সেভেন হ্যান্ড গ্রেনেড বলে জানা গেছে। গ্রেনেডগুলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এনে আশ্রয়শিবিরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কি না, তা অনুসন্ধান করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে উখিয়ার পালংখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প–লাগোয়া বালুখালীর মরাগাছতলা এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় গ্রেনেডগুলো উদ্ধার করা হলেও গতকাল শনিবার রাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানো হয়। এ বিষয়ে গতকাল উখিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
ঘটনায় সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসাইন বলেন, উদ্ধার হওয়া গ্রেনেডগুলো সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে গ্রেনেডগুলো কীভাবে এখানে আনা হয়েছে, কারা এর পেছনে জড়িত, সে রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে প্রায় সময় গোলাগুলি, সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অনেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ছেন। দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ১০ মাসের বেশি সময় ধরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত-লড়াই চলছে। আরকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের সরকারি বাহিনীর ২৫টির বেশি সীমান্তচৌকিসহ মংডু টাউনশিপ দখলে নিয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও অনেক। লুট হওয়া ভারী অস্ত্রের পাশাপাশি সরকারি বাহিনীর অত্যাধুনিক গ্রেনেড ও গুলি সংগ্রহ করে উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে নিয়ে আসছে সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ সাত বছরেও একজন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে নতুন করে আরও রোহিঙ্গার আগমন ঘটছে।