কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৬) সশস্ত্রগোষ্ঠীর গুলিতে এক রোহিঙ্গা মাদ্রাসাছাত্র নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার সময় আশ্রয়শিবিরের এ-৪ ব্লকের বায়তুল আমান মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বশির আহমদ (১৯) ওই মসজিদের পাশেই একটি মাদ্রাসায় পড়তেন। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের সি-৯ ব্লকের বাসিন্দা রহমত উল্লাহ ছেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আশ্রয়শিবিরের একজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, মধ্যরাতে মিয়ানমারের সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সন্ত্রাসী সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি দল আশ্রয়শিবিরের এ-৪ ব্লকের একটি ঘর থেকে মাদ্রাসাছাত্র বশির আহমদকে তুলে নিয়ে পাশের বায়তুল আমান মসজিদের সামনে এনে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে গলা ও বুকে গুলি করা হয়। বশির মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা গুলিবিদ্ধ বশিরকে উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে মাদ্রাসাছাত্র বশির আহমদকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে বশিরের গলা ও বুকে গুলির দাগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার সকালে মায়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার ভোরে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তানজিমারখোলা (ক্যাম্প-১৫) আশ্রয়শিবিরে মোহাম্মদ রিদোয়ান (২৮) নামের এক রোহিঙ্গা তরুণকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘর থেকে তুলে নিয়ে আশ্রয়শিবিরের ই-ব্লকের পানির ট্যাঙ্ক এলাকায় নিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। রিদোয়ান আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৫) এফ-৬ ব্লকের হাসু আলীর ছেলে। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ছয় মাসে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ১১ জন আরসা সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা