খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে ৪ জন মেয়র প্রার্থী, ১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও ২ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন ভুল ও তথ্যে গরমিল থাকায় চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। ৩১টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য ১৪৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ১২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া সংরক্ষিত ১০টি আসনের জন্য জমা দেওয়া ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন আটজন। এর মধ্যে সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১৬ মে ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক, জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মো. আবদুল আউয়াল, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান, মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী ও সৈয়দ কামরুল ইসলাম। আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস নামের সাবেক এক সংসদ সদস্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা জমা দেননি।
আজ সকালে প্রথমে শুরু হয় মেয়র পদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাইয়ের কাজ। এ সময় মনোনয়নপত্রে তথ্যের ঘাটতি ও ভুল তথ্য থাকায় জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান, মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী ও সৈয়দ কামরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এর মধ্যে স্বতন্ত্র তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে ৩০০ ভোটার সমর্থনকারীর তথ্যে ভুল থাকার কারণে। আয়কর রিটার্ন দাখিল, রসিদ ও প্রত্যয়নপত্র জমা না দেওয়ায় বাতিল করা হয়েছে জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেনের মনোনয়নপত্র।
অবৈধ ঘোষণা করা চারজন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া একজন করে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ১, ৯, ১১, ১৪, ১৭, ১৮, ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। তাঁরা হলেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এস এম খুরশিদ আহম্মেদ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জেড এ মাহমুদ। খুরশিদ ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেড এ মাহমুদ হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক।৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুধু খুরশিদই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। আজ যাচাই-বাছাইয়ে তা বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন দুজন। এর মধ্যে ছিলেন বিএনপি নেতা ও বর্তমান কাউন্সিলর মো. শমশের আলী। আজ মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে শমশের আলীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, যাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, তাঁরা ১৯ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করতে পারবেন। ২২ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আপিল নিষ্পত্তি করা হবে।
আগামী ১২ জুন ইভিএমের মাধ্যমে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। আজ যাচাই-বাছাই শেষে ২৫ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন প্রার্থীরা। ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হবে প্রচার-প্রচারণা।