মজুরি বাড়ানোর আন্দোলনে নতুন সংগঠন ‘চা–শ্রমিক অধিকার পরিষদ’

‘চা–শ্রমিক অধিকার পরিষদ’–এর কমিটি গঠনের জন্য চা–শ্রমিকদের নিয়ে সভা চলছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কালীঘাট চা–বাগানে
ছবি: শিমুল তরফদার

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে চা–শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যে আবির্ভাব হচ্ছে নতুন সংগঠনের। চলমান ধর্মঘটে বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের প্রত্যাখ্যান করে এই সংগঠন গড়ে উঠছে। ‘চা–শ্রমিক অধিকার পরিষদ’ নামের নতুন সংগঠনের কমিটি গঠনের জন্য আজ বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কালীঘাট চা–বাগানে আলোচনা সভা শুরু হয়েছে।

আজ বেলা একটায় কালীঘাট চা–বাগানের দুর্গামন্দিরের নাটমণ্ডপে সভা শুরু হয়েছে। নতুন সংগঠনে পঞ্চায়েত নেতা ও তরুণ-যুবকদের অগ্রাধিকার দিয়ে কমিটি গঠন করা হবে বলে জানা যায়।

এর আগে কালীঘাট চা–বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি অভান তাঁতীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকাল থেকে কালীঘাট চা–বাগান, জেরিন চা–বাগান, লংলা চা–বাগান, গান্ধীছড়া চা–বাগান, হুগলি ছড়া চা–বাগান, আমরাইল ছড়া চা–বাগান, ভুরভুরিয়া চা–বাগান, ভাড়াউড়া চা–বাগান, ডাকছড়া চা–বাগান, খাই ছড়া চা–বাগান, লস্করপুর চা–বাগান, রাজঘাট চা–বাগান, খেজুরি চা–বাগান, লাখাই চা–বাগান, বিলাশছড়াসহ বিভিন্ন চা–বাগানের শ্রমিকেরা সভাস্থলে আসেন। সভাস্থলে প্রায় তিন হাজার মানুষ উপস্থিত হন।

সভায় উপস্থিত একাধিক বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি বলেন, তাঁদের দাবি আদায়ের সংগ্রাম বানচাল করার জন্য জনপ্রতিনিধি, বাগানের মালিক ও সরকারি কর্মকর্তারা উঠেপড়ে লেগেছেন। সাধারণ শ্রমিকেরা চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁদের আন্দোলন বন্ধ করতে বলেছেন। এখন তাঁরা বিভিন্ন চা–বাগানে পৃথকভাবে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় আন্দোলন সঠিকভাবে চালিয়ে নিতে ‘চা–শ্রমিক অধিকার পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছেন। চা–বাগান পঞ্চায়েত, চা–শ্রমিক ও যুবকদের সমন্বয়ে সব কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।

নতুন এই সংগঠনের বিষয়ে জানতে চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পালের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

এ দিকে ধর্মঘটের ১৩তম দিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সব চা–বাগানে কাজ বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন চা–বাগানে সভা সমাবেশ করতে দেখা যায়। খেজুরি ছড়া চা–বাগানে শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে দুই ঘণ্টা ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করে।

উল্লেখ্য ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও পরে ১৩ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছেন চা–শ্রমিকেরা। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও সেটা মানছেন না সাধারণ শ্রমিকেরা। বাগানে বাগানে ঘুরে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা।