ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌর শহরে মো. জসীম উদ্দিন ফকির (৭০) নামের বিএনপির এক প্রবীণ নেতার ফ্ল্যাটে ঢুকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের নান্দাইল বাজার-দেওয়ান সড়কের একটি বহুতল ভবনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মো. জসীম উদ্দিন ফকির নান্দাইল উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। তিনি তাঁর মেয়ে ও মেয়ের ছেলেকে নিয়ে নান্দাইল বাজার-দেওয়ান সড়কে অবস্থিত একটি বহুতল ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। গত রোববার রাতের কোনো এক সময় একই ফ্ল্যাটে প্রবেশের জন্য প্রধান দরজার তালা খুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তাতে ব্যর্থ হয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এরপরও তাঁর দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়ে তারা সেদিন চলে যায়।
আজ দুপুরে খবর পেয়ে ওই বাসায় গেলে বিএনপির নেতা জসীম উদ্দিন ফকির বলেন, তিনি, তাঁর মেয়ে ও মেয়ের ঘরের নাতি গত রোববার গাজীপুরে এক স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। আজ নান্দাইলে ফিরে বাসার দরজায় পোড়া দাগ দেখতে পান। অনেক চেষ্টার পর দরজার তালা খুলে বাসায় প্রবেশ করে সবকিছু ঠিকঠাক দেখতে পান। ভ্রমণের ক্লান্তির কারণে তিনি দরজা পোড়ানোর ঘটনাটি থানায় জানাতে পারেননি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে আজ জসীম উদ্দিন বাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন। তাঁর মেয়ে পাশের এক বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁর নাতি রাফায়েত হোসেন খান (১৪) বাসায় পড়ছিল। দুর্বৃত্তদের হানা দেওয়া ও লুটপাটের ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে তা জানানো হয়েছে। দুর্বৃত্তরা তাঁর নাতিকে জিম্মি করে হাতের সামনে যা পেয়েছে, তা লুট করে নিয়ে গেছে।
কিশোর রাফায়েত হোসেন খান জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকজন লোক এসে তার নানার নাম ধরে ডাকতে থাকেন। তখন সে ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে দরজার ছোট ছিদ্র (ডোর উইনডো) দিয়ে দুজন নারী ও তিনজন পুরুষকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পায়। কথোপকথনের পর রাফায়েত দরজা খুলে দিলে পাঁচজনই দ্রুত ফ্ল্যাটের ভেতরে প্রবেশ করেন।
একজন পানি খেতে চাইলে সে পানি আনার জন্য ডাইনিংয়ের দিকে যেতে থাকে। এই সময় হঠাৎ তাঁদের মধ্যে একজন তাকে পেছন থেকে জাপটে মুখ চেপে ধরেন এবং অন্য এক ব্যক্তি গলায় ছুরি ধরেন। একপর্যায়ে কাপড় দিয়ে তার মুখ বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে তাকে এক জায়গায় ফেলে রাখেন। পরে দুর্বৃত্তরা একটি কক্ষে থাকা ওয়ার্ডরোবের ড্রয়ার ভেঙে এক লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে চলে যায়।
বিএনপির প্রবীণ নেতার বাসায় তাঁর নাতিকে জিম্মি করে লুটপাটের বিষয়ে জানার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নান্দাইল মডেল থানার ওসি ফরিদ আহমেদ বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।