কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রকৃত বিলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি বিল তৈরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মচারীকে অবরুদ্ধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর পুনরায় বিল তৈরি এবং তাঁকে প্রত্যাহারের শর্তে প্রায় তিন ঘণ্টা পর পুলিশের সহযোগিতায় ওই কর্মচারীকে উদ্ধার করেন বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া এলাকায় মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। অবরুদ্ধ কর্মচারীর নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় কার্যালয়ের মিটার রিডার–কাম মেসেঞ্জার।
পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক লাহিনীপাড়ার বাসিন্দা জীবন হোসেন বলেন, মাস গেলেই বেড়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিল। কোনো তথ্য জানতে গেলে বিদ্যুতের লোকজন খারাপ আচরণ করেন। সে জন্য বিলের কাগজ দিতে এলে আজ সকাল নয়টার দিকে জাহাঙ্গীর নামের এক কর্মচারীকে আটকে রাখেন জনগণ। শর্ত দিয়ে তিন ঘণ্টা পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নাহিদ বিশ্বাস নামের এক গ্রাহকের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুতের লোকজন ভালো করে মিটার না দেখেই বিল তৈরি করেন। সে জন্য চলতি মাসে ৩২০ ইউনিটের বিল এসেছে। যা একইভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে গত মাসের চেয়ে ১৪০ ইউনিট বেশি।
লাহিনীপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভ্যানচালক রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, একইভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সেপ্টেম্বরে ১২০ ইউনিট আর অক্টোবরে ২৩০ ইউনিট বিল এসেছে। বিদ্যুৎ কর্মচারীর অনিয়মে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিল। এক মাসের ব্যবধানে ১১০ ইউনিট বেশি বিল এসেছে।
নাজিম উদ্দিন নামের এক প্রবীণ কৃষক অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়িতে তিনটি করে লাইট ও ফ্যান চলে। মাঝেমধ্যে একটি সাবমার্সিবল পানির পাম্প চলে। এসব ব্যবহার করে গত মাসে ৯০ ইউনিট আর সেপ্টেম্বরে ১৪০ ইউনিটের বিল এসেছে। এবার ৫০ ইউনিট বাড়িয়ে মনগড়া বিল করেছেন বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন।
কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক বলেন, গ্রাহকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় বিল তৈরি এবং ওই কর্মচারীকে প্রত্যাহারের শর্তে অবরুদ্ধ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাত কামাল বলেন, যাচাই করে বিলে অনিয়ম থাকলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অনিয়ম না পাওয়া গেলে গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুতুড়ে বা মনগড়া বিল তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই।