কুমিল্লার বরুড়ায় শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছেন মো. হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল নামের এক ব্যক্তি। আজ বুধবার বেলা ১১টায় বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। হামিদ লতিফ ভূঁইয়ার গাড়িতেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। তবে তিনি অক্ষত ছিলেন।
এ ঘটনার জন্য বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এন এম মইনুল ইসলামকে দায়ী করেছেন হামিদ লতিফ ভূঁইয়া।
হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কুমিল্লা শহরের কাপ্তান এলাকার বাসিন্দা। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরুড়া উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের মনোহরপুরে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগে তাঁর কোনো পদপদবি নেই। আসন্ন বরুড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবেন জানিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।
হামিদ লতিফ ভূঁইয়া আজ রাত সোয়া আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে কয়েক দিন আগে বরুড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কিছু ফেস্টুন লাগাই। পরে খবর পেলাম, আমার ফেস্টুনগুলো সরিয়ে ওই স্থানে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানের ফেস্টুন লাগানো হয়।
বিষয়টি আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। পরে প্রশাসনকে বলি, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেব। সংসদ সদস্য (কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন) ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফুল দেওয়ার পর আমি ফুল দেব। প্রশাসন আমাকে সকাল সাড়ে ১০টায় ফুল দেওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয়।’
হামিদ লতিফ বলেন, ‘আমি আমার গ্রামের বাড়ি বরুড়ার মনোহরপুর থেকে অনুসারীদের নিয়ে শহীদ মিনারে যাচ্ছিলাম। বরুড়া কলেজ পার হওয়ার পরপরই শহীদ মিনারের অদূরে সড়কের মাঝে বৃষ্টির মতো অর্ধশতাধিক লোক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় এক চিকিৎসকের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আমার গাড়ির ছাদ ইটপাটকেলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ি। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানাই। ওনারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে আমাকে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য প্রশাসন ব্যবস্থা করে দেয়।’
হামিদ লতিফ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হব। সেই লক্ষ্যে এলাকায় পরিচিত হতে ফেস্টুন করি। এগুলো উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মইনুলের লোকজন করেছেন। উপজেলা নির্বাচন তো বহুদূরে। এখনই এই অবস্থা। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আর এমপি মহোদয় তো উপজেলার খোশবাস কলেজ মাঠে একটি অনুষ্ঠানে ছিলাম। কারা যেখানে ঘটনা ঘটিয়েছে, আমি জানি না।’
বরুড়া থানার ওসি মো. রিয়াজউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। হামলার পর কামাল সাহেব (হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল) ফুল দিয়ে বাড়িতে যান।’