আট মাস পরও দুই খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটন হয়নি

এ পরিস্থিতিতে মামলার বাদী ও নিহতের স্বজনেরা ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় গরুর ব্যবসায়ীকে পুড়িয়ে হত্যা ও ইজিবাইকচালককে গলা কেটে হত্যার আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এই দুই হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে মামলার বাদী ও নিহতের স্বজনেরা ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

ওই গরু ব্যবসায়ীর নাম মো. মজিবুর রহমান (৫০)। তিনি উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের তেরোতোপা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। গত ২১ ডিসেম্বর রাতে বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তরা হাত-পা বেঁধে তাঁকে পুড়িয়ে হত্যা করে। ওই ইজিবাইকচালকের নামও মো. মজিবুর রহমান (২৪)। তিনি দুর্গাপুরের পূর্ব নলোয়াপাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। গত ৪ জানুয়ারি দুপুরে কলমাকান্দার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের উত্তর গৌরীপুর এলাকায় একটি খেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এলাকার বাসিন্দা, পুলিশ ও ওই দুজনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গরু ব্যবসায়ী মজিবুর ২১ ডিসেম্বর বিকেলে স্থানীয় পাঁচগাঁও বাজারের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। রাত ১২টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাঁর বাড়ির পূর্ব পাশে পতিত জমিতে রাখা খড়ে আগুন দেখে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মজিবুরের শরীরে আগুন জ্বলছে। পরদিন পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত মজিবুরের বড় ভাই আতাউর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আমির হামজাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তাঁরা জামিনে আছেন। কিন্তু হত্যার রহস্য এখনো উদ্‌ঘাটন হয়নি।

এদিকে দুর্গাপুরের ইজিবাইকচালক মজিবুর গত ৩ জানুয়ারি সকালে নিজ বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন। পরদিন দুপুরে কলমকান্দার উত্তর গৌরীপুর এলাকায় একটি খেত থেকে পুলিশ তাঁর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবুল কাশেম বাদী হয়ে মামলা করেন। তবে এখন পর্যন্ত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

গরু ব্যবসায়ী হত্যা মামলার বাদী আতাউর বলেন, ‘ঘটনার আট মাস চলে গেলেও এখনো পুলিশ রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি। তাই ভাই হত্যার বিচার নিয়ে শঙ্কিত আছি।’

ইজিবাইকচালক হত্যা মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির বাবা বলেন, ‘আমার ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। কিন্তু আমি চাই, এ হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটন হোক। জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এত দিনেও পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাই ন্যায়বিচার নিয়ে আশঙ্কায় আছি।’

পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, ‘পুলিশ দুটি হত্যা মামলাই অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হাত-পা বেঁধে দুর্বৃত্তরা শ্বাস রোধ করে হত্যার পর গরু ব্যবসায়ীর লাশটি পুড়িয়ে দেয়। ইজিবাইকটি ছিনতাইয়ের জন্য চালককে দুর্গাপুর থেকে কলমাকান্দার উত্তর গৌরীপুর এলাকায় নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। আমরা কিছু ক্লু (সূত্র) পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি গোপন রাখা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, রহস্য উদ্‌ঘাটন সম্ভব হবে।’