গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বড়বাড়ি এলাকায় সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সিলিন্ডারবাহী কাভার্ড ভ্যানে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ পাঁচজনের মধ্যে মিঠু মিয়া (২৬) নামের একজনের মৃত্যু হয়। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত মিঠু মিয়া মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ মৌয়ালি গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে। তিনি ওই কাভার্ড ভ্যানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এদিকে বিস্ফোরণের পর ওই সিএনজি স্টেশনে গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ।
বিস্ফোরণে দগ্ধ অন্য চারজন হলেন আল-আমিন (২৫), মো. আনোয়ার হোসেন (৩০), মো. পারভেজ (৩১) ও মো. সিরাজুল ইসলাম (২৮)। তাঁদের মধ্যে আল-আমিনের শরীরের ৫০ শতাংশ, আনোয়ারের ৩৫, সিরাজুলের ৪০ ও পারভেজের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইউব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণে মিঠুর শরীরের শতভাগ দগ্ধ হয়। এ ঘটনায় দগ্ধ অন্য চারজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বড়বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে হাজী ওয়াহেদ আলী সরকার সিএনজি ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডারবোঝাই একটি কাভার্ড ভ্যান গ্যাস নিতে যায়। স্থানীয় একটি কারখানার অর্ধশতাধিক সিলিন্ডার ওই কাভার্ড ভ্যানে ছিল। গ্যাস নেওয়ার সময় হঠাৎ একটি সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কাভার্ড ভ্যানটিতে আগুন লেগে পাঁচজন দগ্ধ হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মিঠুর লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহীম হোসেন বলেন, দগ্ধ বা নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। স্বজনেরা সবাই হাসপাতালে ব্যস্ত থাকায় অভিযোগ দিতে দেরি হচ্ছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তিতাস গ্যাসের গাজীপুরের আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক শাহজাদা ফরাজি প্রথম আলোকে বলেন, স্টেশনটি যে সময় বন্ধ থাকার কথা, তখন তারা গ্যাস সরবরাহ করছিল। ঠিক সেই সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার কারণে রাতেই ওই স্টেশনের গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এর আগেও আইন অমান্য করায় ওই স্টেশনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তখন মুচলেকা দেওয়ায় আবার চালু করার সুযোগ দেওয়া হয়।