মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ট্রেনের ধাক্কায় দুই কিশোরসহ মাইক্রোবাসের তিন যাত্রী আহত হয়েছেন। আজ শনিবার উপজেলার ভাটেরা রেলস্টেশন বাজার এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত তিনজন হলেন কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের গুতগুতি গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে ফাহাদ আহমদ (১৫), জামালের ভাই মুজিব আলীর ছেলে তাহসিন আহমদ (১৪) ও আরেক ভাই বাবুল মিয়ার স্ত্রী জলি বেগম (৪৫)।
আহত জলি বেগমের ছেলে নাজির আহমদ আজ বিকেল চারটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মাকে নিয়ে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটে যাচ্ছেন। ঘটনার সময় তিনি মাইক্রোবাসের পেছনে একটু দূরে মোটরসাইকেলে ছিলেন। মাইক্রোবাসের চালক ট্রেনের অবস্থান না দেখে রেললাইনে উঠে পড়েন। এ দুর্ঘটনার জন্য মাইক্রোবাসের চালক দায়ী।
স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাবুল মিয়ার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র পছন্দ করতে স্বজনেরা একটি মাইক্রোবাসে করে ভাটেরায় যাচ্ছিলেন। মাইক্রোবাসটিতে ১০ জন যাত্রী ছিলেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে মাইক্রোবাসটি ভাটেরা রেলস্টেশন বাজারের কাছে রেলক্রসিং পার হচ্ছিল। এ সময় ঢাকা থেকে আসা সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে মাইক্রোবাসের দরজা ভেঙে যাত্রীদের বের করেন। দুই কিশোরসহ তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানা-পুলিশ ও রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেলওয়ে কুলাউড়া সেকশনের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, দুর্ঘটনার খবর তাঁরা পেয়েছেন। ভাটেরার ওই লেভেল ক্রসিংটি অবৈধ। এ রকম লেভেল ক্রসিং করার সময় বাধা দিলেও এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় লোকজন মানেন না। লেভেল ক্রসিংয়ের দুই পাশে লোকজনকে সতর্ক করে সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে। এটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এর আগে ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় একই এলাকার পাশের আরেকটি অবৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় শিশুসহ মাইক্রোবাসের তিন যাত্রী মারা যান। আহত হন ছয়জন।