অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘হাজার হাজার মায়ের কোল খালি হয়েছে। এখনো মায়ের কান্না বন্ধ হয় নাই। আর আপনারা বিনা পরিশ্রমে চেয়ার পাইছেন আর ওখানে বসে বসে তামাশা করছেন। এই তামাশা দেখার জন্য আপনাদের ওখানে বসাই নাই। জনগণের প্রত্যাশা ছিল... পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশটা হবে সুন্দর রাষ্ট্র। এ জন্যই আমরা রাজনীতি করছি।’
আজ সোমবার খুলনা নগরের ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটি এক গণসমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, বন্ধ মিল–কলকারখানা চালু, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে এ গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়।
রেজাউল করিম বলেন, ২০২৪–এর সাধারণ নির্বাচনের আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করে তাঁদের বিরোধী দল বানাতে চেয়েছিলেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নিছক দু-একটা সংসদ সদস্য, মন্ত্রিত্বের জন্য, সম্পদের জন্য রাজনীতি করে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কখনো লেজুড়বৃত্তিক পরগাছা হতে চায়নি। ইসলামী আন্দোলন রাজনীতি করে দেশ, মানবতা ও ইসলামের কল্যাণের জন্য।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তিনবার ক্ষমতায় থেকে দেশ পরিচালনা করেছে। তারা বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ছিল না। দিনের ভোট রাতে করেছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকার খুনি সরকার, টাকা পাচারকারী এবং বিদেশিদের দালালদের সরকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেধাবী সন্তানেরা ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমেছিল। ঠান্ডা মাথায় গুলি করে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে।
গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুস আহমাদ বলেন, হাসিনা সরকার জাতির সঙ্গে যা করেছে এর বিচার না হলে মানবতার সঙ্গে অপরাধ করা হবে। কিন্তু এই বিষয়ে তেমন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকার আসার পরও অনেকেই দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ পেয়েছে। এখনো অনেকে দেশেই আত্মগোপনে থেকে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
দলের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামতের মর্যাদা দিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও খুলনা মহানগর সভাপতি আব্দুল আউয়াল এতে সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শোয়াইব হুসাইন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মানসুর আহমেদ সাকী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল বশর আজিজী প্রমুখ।