ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের তদন্তে সেই হলে কমিটির সদস্যরা

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো তদন্ত করছে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। শহীদ দিবসে ছুটির দিনেও এ দুই কমিটির সদস্যরা আজ মঙ্গলবার সকালে হলটিতে যান।

হলের শাখা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা সকাল ১০টার পর হলে প্রবেশ করেন। তাঁরা হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে বসে কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন।
বেলা ১১টার দিকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রবেশ করেন হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তাঁরাও প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ের দিকে যান।

হলটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন। একই সঙ্গে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুনের দেওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের দুই নেত্রী সানজিদা চৌধুরী ও তাবাসসুম ইসলামের বক্তব্যও নেওয়া হবে। ঘটনার দিন হলে দায়িত্বরত হাউস টিউটর ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গেও কথা বলবে এই কমিটি।

গত রোববার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এই কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন—কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারী, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর শাহবুব আলম।

১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে তাঁকে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ওই ছাত্রী বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।

নির্যাতনের ঘটনায় এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে সানজিদা ও তাবাসসুম যাতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না পারেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, তবে তদন্তের প্রয়োজনে কমিটি তাঁদের ডাকতে পারবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা ও তাঁর সহযোগী তাবাসসুম ইসলাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। তদন্ত কমিটির ডাকে গতকাল সোমবার তাঁরা ক্যাম্পাসে এসেছিলেন।