পবিত্র রমজান শেষে ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজে ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করবেন সারা দেশের মানুষ। ঈদের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে দিনটি শুরু করা হবে। রাজশাহী ও রংপুর নগরে এবং বগুড়া শহরে কখন, কোথায় ঈদুল ফিতরের প্রধান প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে, তা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাজশাহী: রাজশাহীতে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হজরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সকাল আটটায়। তবে বৃষ্টি হলে বা প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করলে একই সময় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হজরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগা জামে মসজিদে। সে ক্ষেত্রে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হলে ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে দরগা মসজিদে পরপর ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। গত সোমবার দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া শাহ মখদুম (রহ.) মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি আবদুল খালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহীতে ঈদের দ্বিতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে সাতটায় মহানগর ঈদগাহে (টিকাপাড়া)। এখানে ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল আটটায়। বৃষ্টি হলে একই সময়ে পাশেই থাকা টিকাপাড়া মোহাম্মপুর জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সকাল আটটায় মহানগরীর তৃতীয় বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বড় মসজিদ–সংলগ্ন সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে। এখানে প্রধান সড়কের ওপর একটিই ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল আটটায় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাতটায়।
রংপুর: ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায় কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে। তবে বৃষ্টি হলে ঈদের প্রধান জামাত হবে জেলা মডেল মসজিদে একই সময়ে। এই মডেল মসজিদে দ্বিতীয় জামাত হবে সকাল নয়টায়। সকাল সাড়ে আটটায় পুলিশ লাইনস মাঠ, মুন্সিপাড়া ঈদগাহ মাঠ, রংপুর মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠ, ধাপ স্টাফ কোয়ার্টার জামে মসজিদ মাঠ ও বুড়িরহাট কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত হবে।
এ ছাড়া সকাল সাড়ে আটটায় আরও ২২টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হলো শাপলা চত্বর আশরাফিয়া জামে মসজিদ, আদর্শপাড়া জামে মসজিদ, নিউ আদর্শপাড়া জামে মসজিদ, কুতুবিয়া জামে মসজিদ, সেনপাড়া জামে মসজিদ, মুলাটোল জামে মসজিদ, কেরানীপাড়া জামে মসজিদ, কলেজ রোড ট্রাকস্ট্যান্ড জামে মসজিদ, হাবিনগর জামে মসজিদ, কামালকাছনা মসজিদ, দক্ষিণ মুলাটোল জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল জামে মসজিদ, লালকুঠি মসজিদ, ধাপ চারতলা মসজিদ, ফায়ার সার্ভিস জামে মসজিদ, জুম্মাপাড়া মসজিদ, সেন্ট্রাল রোড মসজিদ, লাকী মসজিদ, নূরপুর মসজিদ, কেরানীপাড়া নাসিরাবাদ মসজিদ ও সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া মসজিদ।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ বছর রংপুর মহানগরের ৭৫টিসহ জেলার প্রায় ১ হাজার ২০০ মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে জামাত আদায় করবেন মুসল্লিরা।
ঈদের প্রধান জামাত কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, কয়েক দিন থেকে মাঠের কাজ চলছে। মাঠে শামিয়ানা টাঙানো কাজ চলছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও শেষ।
বগুড়া: বগুড়ায় ১ হাজার ৭৯৫টি ঈদগাহ ময়দান এবং মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। শহরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায় সূত্রাপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে কিংবা বৃষ্টি হলে একই সময়ে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে শহরের নিউমার্কেটের কেন্দ্রীয় বড় মসজিদে এবং স্টেশন সড়কের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে।
সকাল ৯টায় শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত হবে। সকাল সাড়ে ছয়টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া কাছেমুল উলুম জামিল মাদ্রাসা জামে মসজিদে।
বগুড়া জেলা পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, শহরের সুলতানগঞ্জপাড়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত হবে সকাল আটটায়। বৃন্দাবনপাড়া ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে সাতটায়, মালতিনগর ঈদগাহ ময়দানে সকাল পৌনে আটটায়। সকাল আটটায় একযোগে সাবগ্রাম চান্দপাড়া ঈদগাহ ময়দান, ধাওয়াপাড়া বায়তুস সালাম জামে মসজিদে, হরিগারি ঈদগাহ ময়দান, নারুলী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান, নিশিন্দারা কারবালা শাহি ঈদগাহ ময়দান, ফুলবাড়ী উত্তর মধ্যপাড়া গোরস্থান ঈদগাহ ময়দান, বেজোড়া দক্ষিণপাড়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত হবে।
সকাল সাড়ে আটটায় একযোগে ঈদের জামাত হবে মালগ্রাম ঈদগাহ ময়দান, কাটনারপাড়া করোনেশন স্কুল ঈদগাহ ময়দানে। ফুলবাড়ী সরকারি আজিজুল হক কলেজ ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত হবে সকাল সাড়ে সাতটায়।
এ ছাড়া আহলে হাদিস অনুসারীদের ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায় বগুড়া জিলা স্কুল ময়দানে। এ ছাড়া সকাল সাতটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে ঈদের জামাত হবে ঠনঠনিয়া ঈদগাহ ময়দান, ফুলদিঘী ঈদগাহ ময়দান এবং সরকারি মুস্তাফাবিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে।
ঈদুল ফিতরজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদ্যাপনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সব ধরনের কাজ করছে। কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে কয়েক স্তরে নিরাপত্তাবলয় থাকবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঈদগাহ মাঠে মেটাল ডিটেক্টরসহ আর্চওয়ে মেশিনও থাকবে। সাদাপোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ মাঠে থাকবে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিজম্ব প্রতিবেদক, রংপুর, রাজশাহী ও বগুড়া)