যশোরের ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর গ্রামে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হন দুই সাংবাদিক। বুধবার দুপুরে
যশোরের ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর গ্রামে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হন দুই সাংবাদিক। বুধবার দুপুরে

যশোরে তথ্য সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার দুই সাংবাদিক, ক্যামেরা ভাঙচুর

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। আজ বুধবার দুপুরে হামলার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

হামলার শিকার সাংবাদিকেরা হলেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের যশোর জেলা প্রতিনিধি এ এইচ এম জিয়াউল হক ও ক্যামেরাপারসন মো. শরীফ খান। দুর্বৃত্তরা সাংবাদিকদের মারধর করে দুই ঘণ্টা আটকে রাখে বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের একজনকে উদ্ধার করে। দুর্বৃত্তরা সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাঙচুর ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার পর আবার ফেরত দেয় বলেও অভিযোগ করা হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জিয়াউল হক জানান, ঝিকরগাছার বাসিন্দা ও কক্সবাজার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) কার্যালয়ে কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ফখরুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের জমি দখল করেছেন—এমন অভিযোগ পেয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে তিনি তাঁর গ্রামের বাড়িতে যান। ক্যামেরাপারসনকে নিয়ে ভিডিও ফুটেজ নেওয়া শুরু করলে ফখরুলের সহকারী অভি ইসলাম, বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন শরীফের ওপর হামলা ও মারধর করে ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। রক্তাক্ত জখম হলে শরীফকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় এবং তাঁকে আটকে রাখা হয়। তখন শরীফ হাসপাতালে না গিয়ে কৌশলে থানায় গিয়ে ঘটনা জানালে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।

অভিযুক্ত অভি ইসলাম ও বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনার কিছুই জানি না। কারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, তা-ও আমার জানা নেই। আমার বাড়িতে মা ছাড়া আর কেউ থাকে না। আমি সারা দিন কক্সবাজারে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে ছিলাম।’

ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, শরিফ খান থানায় এসে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অন্য সাংবাদিককে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তবে তখন সেখানে হামলাকারী কাউকে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগে তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।

ঘটনায় সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রেসক্লাব যশোরের নেতারা। প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমান বলেন, যে দুজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, তাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে ঝিকরগাছায় গিয়েছিলেন। সেখানে দুর্বৃত্তরা তাঁদের ওপর হামলা করে ক্যামেরা ভাঙচুর করেছে। তাঁরা এ ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছেন। পাশাপাশি জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান।