বাস টার্মিনালটি মূল সড়ক থেকে কিছুটা নিচু। পানিনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে বৃষ্টি হলেই টার্মিনালের ভেতরে ও আশপাশে পানি জমে যায়।
মহাসড়কের পাশে পটুয়াখালীর বাস টার্মিনাল থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ রুটসহ সারা দেশের যাত্রীবাহী বাসগুলোয় হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। কিন্তু বৃষ্টি হলেই দক্ষিণাঞ্চলের এই গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালের ভেতরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাস কাউন্টারের সামনের অংশ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। এতে এই বাসস্ট্যান্ড দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। বাসস্ট্যান্ডে পানি জমে থাকায় বাসমালিক, চালক, পরিবহনশ্রমিকেরাও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
গতকাল শুক্রবার সকালে থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যে পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, বাস টার্মিনালের ভেতরে পানি জমে আছে। মহাসড়কের পাশে কাদাপানিতে একাকার। অভ্যন্তরীণ রুটের বাসগুলো মহাসড়কের পাশের যাত্রীদের জন্য দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। যাত্রীদের কষ্ট করে পানির মধ্য দিয়ে বাসে ওঠানামা করতে হচ্ছে।
এ সময় ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা মেহেদী হাসান নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিনি লঞ্চে করে সকালে পটুয়াখালী পৌঁছে কুয়াকাটা যাওয়ার উদ্দেশ্যে পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল আসেন। কিন্তু এখানে এসেই কাদাপানি মাড়িয়ে বাসে উঠতে হয়েছে।
পটুয়াখালীর গলাচিপার বাসিন্দা মো. কাওসার বলেন, বছরের পর বছর ধরে বর্ষায় বাস টার্মিনালে এই একই অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু যাত্রীদের ভোগান্তি কমছে না। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বাসে উঠতে হয় পা ভিজিয়ে ও কাদামাটি মেখে। এভাবে যাতায়াত করা কষ্টকর।
■ সারা দেশের ৩৫০টি বাস এই টার্মিনাল দিয়ে চলাচল করে।
■ টার্মিনালের শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী।
■ পানি জমে থাকায় ভেতরে সহজে বাস নেওয়া যায় না।
কলাপাড়ার যাত্রী আবুল কালাম বলেন, টার্মিনাল ভবনের শৌচাগার ব্যবহারের অনুপযোগী। দুর্গন্ধে টেকা যায় না। এ রকম এক অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে এই বাস টর্মিনাল দিয়ে সারা দেশের বাস চলাচল করছে।
পটুয়াখালী–বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচলকারী রুদ্র-তূর্য পরিবহনের বাসচালক মো. শহীদ বলেন, বাস টার্মিনালে পানি জমে থাকায় শুধু যাত্রীরাই নন, বাসচালক ও পরিবহনশ্রমিকেরা দুর্ভোগে পড়েন।
পটুয়াখালী শহরের প্রবেশমুখ থেকে একটু দক্ষিণে মহাসড়কের পাশে পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল। ২০০৩ সালে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এই টার্মিনাল নির্মাণ করে। তিন একর জমির ওপর এলজিইডি এটি গড়ে তোলে। পরে তারা এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে।
গোলাম মাওলা আরও বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ পটুয়াখালী শহরের সৌন্দর্য দেখে প্রশংসা করলেও বাস টার্মিনাল দেখে বিস্মিত হয়। শুনেছি, এখানে নতুন করে আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। তবে কাজটি দ্রুত করতে হবে। তা না হলে যাত্রী দুর্ভোগ কমবে না।’
পটুয়াখালীর বাস টার্মিনালের দুরবস্থার বিষয়ে পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বন্দরে ব্যাপক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পটুয়াখালী দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তাই আমরা পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল নতুন করে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। নতুন টার্মিনালে আধুনিক সব ধরনের সুযোগ–সুবিধা থাকবে।’