মাইকিং করেও কুড়িয়ে পাওয়া টাকার মালিকের সন্ধান মেলেনি

কুড়িয়ে পাওয়া টাকার মালিকের খোঁজে ঠাকুরগাঁও শহর জুড়ে মাইকিং করছেন শাকির হোসেন নামের এক যুবক
ছবি: সংগৃহীত

মহাসড়কে পড়ে থাকা টাকা পেয়ে মালিকের খোঁজে ঠাকুরগাঁও শহরে দুই দিন মাইকিং করেছেন শাকির হোসেন ওরফে সৌরভ। কিন্তু প্রকৃত মালিকের খোঁজ মেলেনি। শেষ পর্যন্ত টাকার প্রকৃত মালিকের খোঁজ না পেলে তা দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।

শাকির হোসেন ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের ছেলে। শহরের স্টেডিয়াম এলাকায় মদিনা মেশিনারিজ নামের ক্রোকারিজের দোকান চালান তিনি। প্রাইভেট কার নিয়ে ঘুরতে গিয়ে ১৮ আগস্ট পঞ্চগড় মহাসড়ক ধরে ফেরার পথে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। সে সময় তিনি সেটা তুলে নেন। আশপাশে কোনো পথচারীকে না পেয়ে টাকা নিয়ে তিনি তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে আসেন। পরে ব্যাগ খুলে সেখানে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা পান। সেখানে আর কোনো কাগজপত্র ছিল না। ব্যাগটি তিনি নিজের কাছে রেখে দেন।

শাকির বলেন, ‘টাকাটা পেয়ে মনে করেছিলাম, যাঁর টাকা তিনি হয়তো ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বা মাইকিং করে খুঁজবেন। কিন্তু শুক্রবার রাত পর্যন্ত এমন কিছু না ঘটায় টাকার প্রকৃত মালিকের খোঁজে কী করা যায় ভাবতে থাকি। পরে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের পরামর্শে শনিবার সকাল থেকে ঠাকুরগাঁও শহরে মাইকিং শুরু করি। কিন্তু দুই দিন মাইকিং করেও প্রকৃত মালিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত ১৫ জন ওই টাকা তাঁদের দাবি করে শাকির হোসেনকে কল করেন। কিন্তু তাঁরা যে বর্ণনা দিয়েছেন, কুড়িয়ে পাওয়া ব্যাগের সঙ্গে তার মিল পাওয়া যায়নি। শাকির হোসেন বলেন, গতকাল পঞ্চগড়ের এক পাথর ব্যবসায়ী টাকাগুলো তাঁর দাবি করে তাঁকে কল করেছিলেন। সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ে আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। এই টাকা নিয়ে তিনি রীতিমতো অস্বস্তিতে আছেন।

টাকার প্রকৃত মালিকের খোঁজ না পাওয়া গেলে টাকাগুলো কী করবেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে শাকির হোসেন বলেন, প্রকৃত মালিককে খোঁজার চেষ্টা চলছে। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাতেও খবরটি এসেছে। ফেসবুকে পোস্ট দিয়েও টাকার মালিকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আরও দু-এক দিন তিনি অপেক্ষা করবেন। শেষ পর্যন্ত খোঁজ না পেলে দুস্থদের মধ্যে টাকাটা বিলিয়ে দেবেন বলে তিনি ভাবছেন।

টাকা বিলিয়ে দেওয়ার পর প্রকৃত দাবিদার পাওয়া গেলে কী করবেন—জানতে চাইলে শাকির হোসেন বলেন, ‘আমি নিজের গচ্ছিত টাকা থেকে তাঁকে সমপরিমাণ টাকা দিয়ে দেব। আজ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে কী করা যায়, সে ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবছি।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কুড়িয়ে পাওয়া টাকা দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার বিষয়টা সংবেদনশীল। বিষয়টা আমাকে জানতে হবে। তবে আমি মনে করি, টাকাগুলো যেকোনোভাবে সংরক্ষণ করে রাখা ভালো। আর টাকার প্রকৃত মালিক না পাওয়া গেলে টাকাটা রাষ্ট্রের সম্পদ হয়ে যাবে কি না, এটা দেখতে হবে।’