খুলনার তেরখাদা উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলামকে সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা নগরের নবপল্লী কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ছাত্র অধিকার পরিষদ খুলনা জেলা শাখার নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্র অধিকার পরিষদ খুলনা জেলা সভাপতি সাজিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাইফুল ইসলামকে স্থানীয় হাঁড়িখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যান ৮-১০ ব্যক্তি। তাঁদের সঙ্গে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস ছিল। এ সময় স্থানীয় লোকজন মাইক্রোবাসের সঙ্গে থাকা একটি মোটরসাইকেলে তেরখাদা থানার একজন উপপরিদর্শককে (এসআই) দেখেছিলেন। তবে পরবর্তীকালে ওই এসআই সেখানে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা তেরখাদা থানায় যোগাযোগ করলে সেখান থেকে কোনো সদুত্তর পাননি। সাইফুল ইসলামের মা ও ভাই শুক্রবার সকালে খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয়, সাইফুল ইসলাম নামের কাউকে তাঁরা গ্রেপ্তার করেননি। সাইফুলকে তুলে নেওয়ার সময় তাঁর কাছে নিজের ব্যবহৃত একটি ফোন ছিল। তুলে নেওয়ার পরবর্তী ৪৫-৫০ মিনিট পর্যন্ত ওই নম্বর খোলা ছিল। পরবর্তীকালে নম্বরটি বন্ধ করে রাখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সাইফুলকে নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় আছেন। তাঁরা সাইফুলের সন্ধান চান। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা কোনো তদন্তের প্রয়োজন হলে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা সশরীর স্বেচ্ছায় উপস্থিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন। কিন্তু এ ধরনের গুম মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের খুলনা জেলা শাখার সদস্যসচিব হামিদুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ফয়জুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ফাতেমা তুজ জোহরা প্রমুখ।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় ছাত্র অধিকার পরিষদ খুলনা জেলা সভাপতি সাজিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত তাঁরা সাইফুল ইসলামের কোনো সন্ধান পাননি। আজ তাঁরা এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জানতে চাইলে তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল আলম আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাপারটি তাঁরা শুনেছেন। অনেকে ফোন দিয়েছেন। তাঁরাও এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজ সকাল ১০টায় খুলনার পুলিশ সুপার মাহবুব হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।