বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ভ্যানচালক কিশোর সাব্বির শেখ (১৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার বিকেলে পিবিআইয়ের বাগেরহাট কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
পিবিআই সূত্র জানায়, হত্যার শিকার ও হত্যাকারী—দুজনই কিশোর। তারা পরস্পর বন্ধু ছিল। ‘ফ্রি ফায়ার গেম’ খেলা নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সাব্বির শেখের বাড়ি খুলনার তেরখাদা উপজেলার কুশলা গ্রামে। সে তেরখাদা ও পার্শ্ববর্তী মোল্লাহাট উপজেলার ছোট কাচনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভ্যান চালাত।
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, ৯ জানুয়ারি থেকে সাব্বির নিখোঁজ ছিল। ১৭ জানুয়ারি মোল্লাহাট উপজেলার ছোট কাচনা এলাকার একটি গোডাউনের নিচের ডোবা থেকে পুলিশ একটি লাশ উদ্ধার করে। পরে সাব্বিরের বাবা বোরহান শেখ পরনের পোশাক দেখে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।
পিবিআই বাগেরহাট কার্যালয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভার্চ্যুয়াল গেম ফ্রি ফায়ার। এ খেলা নিয়ে সাব্বিরের সঙ্গে তার বন্ধুর (১৭) দ্বন্দ্ব হয়। ওই কিশোরের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার ডিংসাইপাড়ায়। সে মোল্লাহাট উপজেলার ছোট কাচনা এলাকায় একটি ভ্যান ও রিকশার গ্যারেজে মেকানিকের কাজ করত।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর বন্ধু সাব্বির শেখকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যার শিকার ও হত্যাকারী—দুজনই ভালো বন্ধু ছিল। তারা বিভিন্ন সময় একসঙ্গে ফ্রি ফায়ার গেম খেলত। খেলায় হেরে সাব্বিরের সঙ্গে তার ওই মেকানিক বন্ধুর ঝগড়া হয়েছিল। ওই সময় সাব্বির তাকে গালাগাল করে। এ কারণে সে ক্ষুব্ধ ছিল।
গ্রেপ্তার কিশোর জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ৯ জানুয়ারি বিকেলে এক শিশুকে দিয়ে সাব্বিরকে ডেকে এনে তার গ্যারেজের পেছনের কক্ষে দুজন ফ্রি ফায়ার গেম খেলতে শুরু করে। একপর্যায়ে সে সাব্বিরের গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে সেখানে লাশ কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে।
এরপর সাব্বিরের ভ্যানটির বিভিন্ন অংশ খুলে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দেয়। ওই রাতেই সাব্বিরের লাশ পাশের একটি গুদামের নিচের ডোবায় ফেলে নারায়ণগঞ্জে পালিয়ে যায় ওই কিশোর।
তদন্তের একপর্যায়ে গত রোববার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের সোঁনারগা উপজেলার মেঘনা ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।