ইউপি সদস্য পদে পাঁচবার ভোট গণনার পর এক ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন আব্দুস সবুর (পিন্টু)। কিন্তু ফলাফলে সন্তুষ্ট হতে না পেরে জয়পুরহাট নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন তিনি। তিন বছর পর ট্রাইব্যুনালের বিচারক ইফতেখার শাহরিয়ার আব্দুস সবুরকে তিন ভোটে জয়ী ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।
১৫ অক্টোবর এ রায় ঘোষণা করা হয়। তবে ঘটনাটি আজ মঙ্গলবার জানাজানি হয়। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে আব্দুস সবুর (তালা) ও মারুফ হাসান (ফুটবল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোট গ্রহণ শেষে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মারুফ হাসানকে জয়ী ঘোষণা দেন। এ নিয়ে প্রতিপক্ষ আব্দুস সবুর আপত্তি তোলেন।
পাঁচবার ভোট গণনার পর মাত্র এক ভোটে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী মারুফ হাসানকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তখন এক ভোটে পরাজিত প্রার্থী আব্দুস সবুর ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাঁকে পরাজিত করার অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর আব্দুস সবুর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন। আদালত ১৫ অক্টোবর তাঁকে জয়ী ঘোষণা করেন। আদালতের পুনর্গণনায় তালা প্রতীকের আব্দুস সবুর ১ হাজার ১১৪ ভোট এবং ফুটবল প্রতীকের মারুফ হাসান ১ হাজার ১১১ ভোট পেয়েছেন।
আদালতের রায়ে নবনির্বাচিত আব্দুস সবুর প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু পাঁচবার গণনার পরও তাঁকে এক ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছিল। তিনি দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতের রায়কে আমলে নিয়ে নতুন গেজেটে ইউপি সদস্য হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমান ইউপি সদস্য মারুফ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। ২০২১ সালের নির্বাচনে ভোট গণনার সময় ভোটসংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে ভোট গণনা করে আমাকে এক ভোটে জয়ী ঘোষণা করেছিলেন। আমি প্রায় তিন বছর ধরে ইউপি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালে তিলকপুর ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী আব্দুস সবুর আদালতে মামলা করেছিলেন। আদালতে ভোট পুনর্গণনার পরাজিত আব্দুস সবুর তিন ভোট বেশি পেয়েছেন। আদালতের রায়ের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এখন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। যদি কোনো আইনি ঝামেলা থাকে, তাহলে আদালতের রায়ে জয়ী প্রার্থী শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।