গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদের তীরে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এর আগে আজ শুক্রবার সকাল থেকে নদের তীরে ইজতেমা মাঠের টিনশেড মসজিদে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনের ‘জোড়’ ইজতেমা (ইজতেমার আগে প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ)। এতে অংশ নিয়েছেন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা। বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে আগামী ৩ ডিসেম্বর এ জোড় শেষ হবে।
তাবলিগ জামাত দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী, অন্য ভাগে শুরায়ী নেজাম বা বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা। তাঁদের মধ্যে বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। প্রথম পর্বে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা করবেন। চার দিন বিরতি দিয়ে ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা করবেন সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। এখন যাঁরা মাঠে ‘জোড়’ ইজতেমা শুরু করেছেন, তাঁরা শুরায়ী নেজাম বা জুবায়েরের অনুসারী।
তাবলিগ জামাতের সাথিরা জানান, প্রতিবছর ইজতেমার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে তুরাগতীরের ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় অনুষ্ঠিত হয়। এখানে তাবলিগের সাথিরা সারা বছরের কাজের বর্ণনা করেন এবং বড়দের পথপ্রদর্শন লাভের সুযোগ পান। এ জন্য সারা বছর তাবলিগ জামাতের সাথিরা জোড়ের অপেক্ষায় থাকেন। এই জোড়কে কেন্দ্র করে দেশ ও দেশের বাইরের শুরায়ী নেজামের মুরব্বিরা একত্র হন।
প্রথম পর্বের ইজতেমার গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. হাবিবুল্লাহ রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ফজরের নামাজের পর বিশেষ বয়ানের মধ্য দিয়ে আমাদের পাঁচ দিনের জোড় শুরু হয়েছে। এখানে অংশ নিচ্ছেন কেবল সারা দেশের ৩ চিল্লার সাথি ও অন্তত ১ চিল্লায় (৪০ দিন) সময় দিয়েছেন, এমন আলেমরা। এই জোড় আমাদের দাওয়াতের কাজের চেতনার স্পন্দন। দাওয়াতের কাজের এক গভীর নকশা এখান থেকেই অঙ্কিত হয়। যে নকশার ওপর কাজ ও কাজের সাথিদের পথ চলতে হয়।’
সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো ইজতেমা মাঠেই এখন মুসল্লিদের আনাগোনা। এর মধ্যে মূল কাজ পরিচালিত হচ্ছে ইজতেমা মাঠের টিনশেড মসজিদ থেকে। মসজিদের ভেতর জায়গা না থাকায় অসংখ্য মুসল্লি শামিয়ানা টানিয়ে মাঠে অবস্থান করছেন। টিনশেড মসজিদ থেকে বয়ান হচ্ছে, তাঁরা সেটি শুনছেন। পাশাপাশি ইসলামি বই পড়ে ও আলোচনা করে সময় কাটাচ্ছেন। এর মধ্যে দুপুরে বড় জামাতে একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।