গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে আবারও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সিজন ড্রেসেস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টঙ্গীর খাঁপাড়া এলাকায় এশিয়া পাম্পের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন যাত্রীরা।
টঙ্গীতে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে পুলিশ-সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ছেড়ে দেন। পরে ৭ ঘণ্টা পর যান চলাচল শুরু।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর একই দাবিতে একই স্থানে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন।
শিল্প পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, সিজন ড্রেসেস লিমিটেড কারখানাটি টঙ্গীর খাঁপাড়া এলাকায় অবস্থিত। এ কারখানায় কাজ করেন ১ হাজার ৬০০ জন শ্রমিক। কারখানাটিতে গত জুলাই মাসের অর্ধেক ও আগস্ট মাসের পুরো বেতন বকেয়া আছে। ১৭ সেপ্টেম্বর বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জুলাই মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করে। বাকি অর্ধেক বেতন গতকাল রোববার পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু গতকাল সারা দিন পার হয়ে গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁদের বেতন দেয়নি। তাই আজ বকেয়া বেতনের দাবিতে আবারও রাস্তায় নেমে আসেন শ্রমিকেরা। বেলা সাড়ে ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিলেন তাঁরা।
কারখানার শ্রমিক মোছা. রোকসানা বলেন, ‘এই ফ্যাক্টরিতে কাজ কইর্যা আমরা কোনো মাসেই ঠিকমতো বেতন পাই নাই। প্রত্যেক মাসেই বেতনের লইগ্যা কারখানার মালিক একটা না একটা ঝামেলা করে।’
আজ সকাল ১০টার দিকে টঙ্গীর খাঁপাড়ার এশিয়া পাম্প–সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মহাসড়কের দুদিক থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। গাজীপুর শিল্প ও মহানগর পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক। তাঁরা দেড় মাসের বেতন পাবেন। তবে গতকাল জুলাই মাসের বাকি অর্ধেক বেতন পরিশোধের কথা ছিল। শ্রমিকেরা বেতনের জন্য সারা দিন কারখানায় বসে ছিলেন। কিন্তু কারখানার মালিক বেতন দেননি। সেই সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে কোনো রকম কথা বলা বা যোগাযোগের চেষ্টাও করেননি। এ কারণে শ্রমিকেরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। তিনি আরও বলেন, এই কারখানার মালিক সব সময় শ্রমিকদের বেতন নিয়ে ঝামেলা করেন। এর আগেও কয়েকবার বহু দেনদরবার করে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করাতে হয়েছে। এটার সমাধান হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কারখানার মালিক বাহাউদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।