চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি নাগরিক মিজানুর রহমানের (৫০) লাশ ফেরত পেলেন তাঁর পরিবার। ঘটনার সাত দিন পর লাশটি ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। আজ বুধবার বিকেল উপজেলার বেণীপুর সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে লাশটি হস্তান্তর করা হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহেশপুর ব্যাটালিয়নের (৫৮ বিজিবি) অধিনায়ক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লাশটি হস্তান্তর করা হয়। ৫৮ বিজিবির পক্ষে বেণীপুর কোম্পানি কমান্ডার আতিয়ার রহমান নেতৃত্ব দেন।
পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণগঞ্জ থানার নোনাগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান মিজানুর। তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান।
এ সময় জীবননগরের সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, জীবননগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম রায়হান ও এসআই সৈকত সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত মিজানুর ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের নবীছদ্দী মণ্ডলের ছেলে। তিনি জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেণীপুর গ্রামের আয়ুব আলীর মেয়ে নাসিমা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিন শ্বশুরবাড়ি এলাকায় আসাদ মেম্বারের জমিতে পাটকাঠি ও টিনের ঘর তুলে চার বছর ধরে বসবাস করছিলেন। মিজানুর-নাসিমা দম্পতির চার বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম জানান, মিজানুর আগে ভারত থেকে সীমান্তপথে গরু এনে ব্যবসা করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সীমান্তপথে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারের (ধুড় পাচার) কাজ করছিলেন। বুধবার রাতে মিজানুর ও তাঁর সহযোগীরা কয়েকজনকে নিয়ে অবৈধভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণগঞ্জ থানার নোনাগঞ্জ সীমান্তে যান। ফেরার সময় বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় মিজানুর। এবং তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান।
গত শুক্রবার রাতে ভারতের নোনাগঞ্জ সীমান্তের ভারতীয় অংশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পর দিন শনিবার বিকেলে ফেসবুকে মিজানুরের রক্তাক্ত মৃতদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়লে স্ত্রী নাসিমা খাতুন লাশটি তাঁর স্বামীর বলে শনাক্ত করেন।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান জানান, বিজিবি ও বিএসএফের প্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত দুই দেশের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মিজানুরের লাশ ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা লাশ গ্রহণ করে দাফনের জন্য ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে নিয়ে গেছেন।