গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় একটি পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় দুর্ভোগে পড়েন ওই মহাসড়কের চলাচলকারীরা। আজ শনিবার সকাল পৌনে ৯টায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। পরে ওই কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে আশপাশের ২১টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় টি এন জেড অ্যাপারেলস গ্রুপের পাঁচটি কারখানা রয়েছে। ওই কারখানার শ্রমিকদের বেতন–ভাতা না দিয়ে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রেখেছে। টি এন জেড গ্রুপের ছয়টি কারখানার তিন মাসের বেতন বকেয়া আছে। এ নিয়ে শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তা পরিশোধ করেনি। পরে গত মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা মালেকের বাড়ি কলম্বিয়া মোড় এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলেও মালিক তাঁদের বেতন পরিশোধ করেননি। যার কারণে আজ সকাল আটটা থেকে শ্রমিকেরা কারখানার সামনে জড়ো হন। পরে সকাল পৌনে ৯টা থেকে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে চলাচলকারীরা দুর্ভোগে পড়েন। এ সময় অনেকে বিকল্প পথে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আবার অনেক যানবাহন সকাল থেকে আটকা পড়ে আছে।
কারখানার শ্রমিক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তিন মাস ধরে বেতন দিই, দিচ্ছি বললেও এখন পর্যন্ত বেতন–ভাতা পাইনি। যার কারণে বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।’ সুমন মিয়া নামের অপর শ্রমিক বলেন, ‘পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করতে হয়েছে। যতক্ষণ বেতন না পাব, সড়ক ছেড়ে যাচ্ছি না।’
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘কারখানার মালিক আমাদের দিয়ে কয়েকবার বেতন দেওয়ার সময় দিয়েছেন। কিন্তু মালিক সেই কথা রাখেননি। মালিককে নিয়ে বিজিএমইএ ভবনে বৈঠক হয়েছে, তারপরও বেতন দিচ্ছেন না। আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেও সারা দিনে সমাধান করা সম্ভব হয়নি।’
সারোয়ার আলম আরও বলেন, ওই কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে জেলার ২১টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।