যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভৈরব নদ থেকে হাবিবুর রহমান (২৭) নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার বিভাগ্দী ও মধ্যপুর এলাকা থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত জিআই পাইপ ও ক্রিকেট স্টাম্প উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, হাবিবুর মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। মাদক বিক্রির টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে গলায় ছুরি মেরে এবং জিআই পাইপ ও ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হাবিবুরকে হত্যা করেছেন ওই চারজন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তরুণেরা বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বিভাগ্দী এলাকায় ভৈরব নদ থেকে হাবিবুর রহমানের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। হাতে ও পায়ে বালুর বস্তা বাঁধা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে নওয়াপাড়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ। হাবিবুর রহমান উপজেলার মধ্যপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল অভয়নগর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার চার তরুণ হলেন অভয়নগর উপজেলার মধ্যপুর গ্রামের মেহেদী হাসান (২২), বিভাগ্দী গ্রামের হুমায়ুন শেখ (২২), একই গ্রামের ফয়সাল শেখ (২১) ও খন্দকার আল আমিন (৩০)।
গ্রেপ্তার চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে জেলা ডিবির উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম বলেন, মাদক বিক্রির টাকা ভাগ–বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে হাবিবুরের সঙ্গে ইয়াসিনের দ্বন্দ্ব হয়। দ্বন্দ্বের জেরে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইয়াসিন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদক কিনতে গত রোববার সন্ধ্যায় মো. হাসানের মাধ্যমে হাবিবুরকে বিভাগ্দী গ্রামের ভৈরব নদের তীরে বালুর মাঠে ডেকে নিয়ে যান ইয়াসিন।
রাত আটটার দিকে সেখানে ইয়াসিন তাঁর হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে হাবিবুরের গলায় আঘাত করেন। উপস্থিত অন্য আসামিরা ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে আঘাত করে হাবিবুরকে নদের পানিতে ফেলে দেন। এরপর ইয়াসিন জিআই পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করে হাবিবুরের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে তাঁরা হাবিবুরের হাত ও পায়ে বালুর বস্তা বেঁধে নদের পানিতে ডুবিয়ে দেন।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, হাবিবুর রহমান একজন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর নামে অভয়নগর থানায় তিনটি মাদকের মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার চার আসামিকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মূল অভিযুক্ত ইয়াসিনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।