অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে কাউকে উপদেষ্টা করা হয়নি। তিন বিভাগ থেকে কী একজনও নেই, যিনি মন্ত্রণালয় চালানোর যোগ্য। অঞ্চলবৈষম্য আমরা সমর্থন করি না।’
আজ শনিবার সকালে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সারজিস আলম।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকীকে নিয়োগের সমালোচনা করে সারজিস আলম বলেন, ‘ফারুকী তাঁর পুরো সময়ে ক্ষমতায় কাছাকাছি থাকার জন্য যেভাবে তোষামদি করার দরকার তা করেছেন। এই ফারুকীরা কীভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসেন। এ রকম কঠিন সময়ে নীরব থাকা ও গা বাঁচিয়ে চলা লোকজনকে আমরা উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চাই না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে উপদেষ্টা করার দাবির বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অনেকবার আখতার হোসেনের রক্ত ঝরেছে। তিনি প্রতিদিন আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন। তাঁর এই অবদানকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর মামলা–বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সারজিস বলেন, ‘মামলা–বাণিজ্য শুধু রংপুরে নয়, সারা বাংলাদেশে চলছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে কঠোরভাবে বলতে চাই, আমার শহীদ ও আহত ভাইদের নিয়ে মামলা–বাণিজ্য চলবে না। মামলায় টাকা দিয়ে নাম দিচ্ছে, টাকা নিয়ে নাম কাটাচ্ছে, এই ব্যবসা থেকে সামগ্রিকভাবে সবাইকে বের হতে হবে।’
নেতা-কর্মীদের খোলা মাঠে রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন হাসিনা
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী আলোয়াখোয়া রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, যে নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার ওপর এত ভরসা করতেন, সেই নেতা-কর্মীদের খোলা মাঠে রেখে ভয়ে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ কীভাবে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্য দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়েছে, হয়রানি করিয়েছে, জেল খাটিয়েছে, গুম করেছে, খুন করেছে, নির্যাতন করেছে। বাড়িতে থাকতে দেয়নি। অনেককেই বউ–বাচ্চাসহ বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা প্রশাসনকে অপব্যবহার করে যে কাজগুলো করেছে, এর ফল কী হতে, পারে তা “খুনি” হাসিনা ১৬ বছর পর স্বচক্ষে দেখিয়েছে।’
সারজিস আলম আরও বলেন, যাঁরা ভালো, যাঁরা ভালো কাজ করেছেন, কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, কোনো ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তাঁরা যে দলেরই হোক না কেন, তাঁদের সঙ্গে যেন নতুন করে অন্যায় না হয়।