টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বিপর্যস্ত কুমিল্লা। অতিবৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে কুমিল্লায় অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার কুমিল্লা নগর, লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
দুজন বন্যার পানিতে তলিয়ে, একজন বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একজনের মাথায় গাছ পড়ে মারা যান। মৃত ব্যক্তিরা হলেন নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার বাসিন্দা কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা নগরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫) ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৪)। লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
গতকাল মধ্যরাতে মাছ ধরতে গিয়ে স্থানীয় একটি সেতুর নিচে তলিয়ে যান নাঙ্গলকোটের দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী। প্রবল স্রোতে হারিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলের অদূরে তাঁর লাশ ভেসে ওঠে। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে গতকাল বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাফি (১৫) নামে কুমিল্লা নগরের ওই কিশোর মারা যায়। কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক যোবায়ের হোসেন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
চৌদ্দগ্রামে বন্যার পানিতে মাছ ধরার সময় গাছ পড়ে শাহাদাত হোসেন (৩৪) নামের এক প্রবাসী মারা যান। গতকাল বুধবার সকালে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সোনাকাটিয়া (আদর্শ গ্রাম) পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত সোমবার বিকেলে সোহরাব হোসেন নামের এক আইনজীবী বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। কুমিল্লা নগরের সালাউদ্দিন মোড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রেখে বের হলে বৃষ্টির পানিতে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে তিনি মারা যান।
বন্যার প্রভাবে গতকাল চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার। তিনি বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলায় ১৭টি চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। উপজেলা চিকিৎসক দল থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও খাওয়ার স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।