সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঢাকা-ডামুড্যাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ স্বর্ণদ্বীপের তিন যাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনায় লঞ্চটি জব্দ করেছে পুলিশ। এ সময় লঞ্চের মাস্টার ও চালককে আটক করা হয়েছে।
আজ রোববার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সাইক্কা এলাকার জয়ন্তিয়া নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর সকাল সাতটার দিকে লঞ্চঘাটে নোঙর করার পর লঞ্চের মাস্টার নুরুজ্জামান ও চালক ইমরান হোসেন ব্যাপারীকে আটক করা হয়। লঞ্চটি জব্দ করে গোসাইরহাটের পট্টি ঘাটে রাখা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গোসাইরহাটের সাইক্কা এলাকায় সেতুর সঙ্গে লঞ্চের তৃতীয় তলায় থাকা পানির ট্যাংকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পানির ট্যাংক ছিটকে ঘুমন্ত যাত্রীদের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তিন যাত্রী মারা যান। আহত হন দুজন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন জামালপুরের বোরহান আলীর ছেলে সাগর আলী, টাঙ্গাইলের নাজিম উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমেদ ও গোসাইরহাটের শাহ আলী মোল্লার ছেলে তানজিল। তাঁরা তিনজন গাজীপুরের একটি তৈরি পোশাককারখানার শ্রমিক। তাঁদের লাশ গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর আহত সাগর (১৮) ও হীরাকে (২৪) হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নিহত তানজিলের ভাই প্রত্যক্ষদর্শী সজীব মোল্যা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সবাই মিলে গ্রামে যাচ্ছিলাম। সঙ্গে আমার ভাইয়ের বন্ধুরা ছিলেন। তাঁরা লঞ্চের তৃতীয় তলায় ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ সেতুর সঙ্গে লঞ্চের ধাক্কা লাগে। চিৎকার–চেঁচামেচি শুনে আমরা দ্বিতীয় তলা থেকে সেখানে ছুটে যাই। পানির ট্যাংকের নিচে ভাই ও তাঁর বন্ধুদের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখি। সেখানেই তাঁদের মৃত্যু হয়।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এরপর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লঞ্চ জব্দ করে মাস্টার ও চালককে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্বর্ণদ্বীপ প্লাস লঞ্চের মালিক আবদুল জব্বার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমার লঞ্চটি ওই রুটে চলাচল করছে। কখনো এমন হয়নি। দুর্ঘটনার বিষয়টি গণমাধ্যমের খবরে আমি জেনেছি। লঞ্চের শ্রমিকেরা আমাকে কিছুই জানায়নি। তারা লঞ্চটি ঘাটে নোঙর করে পালিয়ে গেছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানি না।’