সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের গুলিতে সৈয়দ জামাল মিয়া (৪৫) নামের এক অটোরিকশাচালক খুন হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর ঈশানকোণা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
নিহত সৈয়দ জামাল সৈয়দপুর ঈশানকোণা গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও পাঁচজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৈয়দপুর ঈশানকোণা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ আলমগীর মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের সৈয়দ হোসাইন আহমেদের মধ্যে কয়েক দিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। গতকাল রাতে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাত নয়টার দিকে সৈয়দ হোসাইনের লোকজন সৈয়দ আলমগীরের বাড়িতে গেলে তাঁর (আলমগীর) লোকজন তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। এতে সৈয়দ জামাল মিয়া (৪৫), সৈয়দ গফর আহমেদ (২৮), সৈয়দ সেলু মিয়া (৫৫), সৈয়দ হোসাইন মিয়া (৩০) সৈয়দ আনহার মিয়া (৬০) ও সৈয়দ আমিন মিয়া (৬৫) গুলিবিদ্ধ হন। রাত ১০টার দিকে তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আওলাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ ছয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সৈয়দ জামালের মৃত্যু হয়। আহত অন্যরা সেখানে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ হোসাইন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আলমগীরের লোকজন তাঁদের ওপর অতর্কিত গুলি চালান। এতে তাঁর ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাঁর আরও ৫ আত্মীয়। এ ঘটনায় তিনি হত্যা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সৈয়দ আলমগীর মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর তাঁর লোকজনও গা ঢাকা দিয়েছেন। পলাতক থাকায় তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা পরস্পরের আত্মীয়। আধিপত্য নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছে। সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।