রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ঈদ ঘিরে ১০ দিন বাল্কহেড চলাচল ও ৭ দিন সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন রাখতে ১৮টি ফেরি এবং ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ঘাট ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় জানানো হয়, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৩–২৩ জুন পর্যন্ত এই ১০ দিন রাতের বেলায় নৌপথে সব ধরনের বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ১৪–২০ জুন পর্যন্ত ৭ দিন কোরবানির পশু ও নিত্য প্রয়োজনীয় পচনশীল পণবাহী ছাড়া সাধারণ ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ফেরি পারাপার বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ১২–১৬ জুন পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়াগামী, ১৮–২২ জুন পর্যন্ত দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়াগামী লঞ্চে মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকবে।
জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে সিভিল সার্জন মো. ইব্রাহিম টিটন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সিদ্ধার্থ ভৌমিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত সরকার, জেলা প্রাণিসম্পদ প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম তালুকদার, গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক সালাহ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে তিনটি ঘাট সচল থাকলেও ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের প্রয়োজনে আরেকটি ঘাট বাড়ানো হতে পারে। এ ছাড়া ১৪টি থেকে বাড়িয়ে ফেরি রাখা হবে ১৮টি।
বিআইডব্লিউটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম বলেন, তিনটি ঘাটের পাশাপাশি দুই-একদিনের মধ্যে বন্ধ থাকা ৬ নম্বর ঘাট চালু করা হবে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে লঞ্চঘাট থেকে ৭ নম্বর ফেরিঘাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটারে সাত-আটটি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্থান মেরামত প্রয়োজন।
গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, কোরবানির পশুবাহী ট্রাক দ্রুত পারাপারের ব্যবস্থাসহ যাত্রীদের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং কোনো ধরনের অপরাধ যাতে সংঘঠিত না হয়, এ জন্য পর্যাপ্ত লাইটিং ব্যবস্থা করা, বাস ও থ্রি-হুইলার চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট রাস্তা করা প্রয়োজন।
সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুবিধাভোগী দালাল চক্র যাতে ঘাটে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে নজরদারি করা হবে। ছিনতাই, দালাল, পকেটমার, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে পুলিশ মনিটরিং, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। পশুবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজি যাতে না হয় সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানো হবে। ফেরিতে জুয়া খেলা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত সরকার বলেন, ঈদে যানবাহন এবং যাত্রী পারাপার নির্বিঘ্ন রাখতে ঘাট এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো অপরাধ দমনে সাদা পোশাকের পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।