পটুয়াখালী পৌরসভা

প্রচারণায় ব্যস্ত মেয়র পদের প্রার্থীরা, দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি

পোস্টারে ছেয়ে গেছে সড়ক ও বাজার। আজ মঙ্গলবার পটুয়াখালী পৌরসভার প্রেসক্লাব এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠেছে। শহরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে, বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার টানানো হয়েছে। প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মেয়র প্রার্থীরা। লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করছেন তাঁরা। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তাঁরা শহরের উন্নয়নসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। আগামী ৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

মেয়র পদে প্রার্থী রয়েছেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ (জগ প্রতীক), মেয়রের ভাই আবুল কালাম আজাদ (রেল ইঞ্জিন), সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম (মোবাইল ফোন), পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন (নারিকেল গাছ) ও নাসির উদ্দিন খান (কম্পিউটার)। প্রার্থীরা প্রচারণায় সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত ডিজিটাল পৌর উন্নয়নে কাজ করার কথা বলেছেন।

বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ ও সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম পটুয়াখালী পৌরসভার উন্নয়নে তাঁদের ভূমিকার কথা তুলে ধরছেন। এ দুজনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

পটুয়াখালী পৌরসভার সদর রোড এলাকায় গতকাল সোমবার গণসংযোগ করেন মেয়র পদের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম

শফিকুল ইসলাম গতকাল সোমবার শহরের পুরান বাজার, নতুন বাজার ও নিউমার্কেট এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। বিকেলে উঠান বৈঠক করেন হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায়। তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার শহরের আদালতপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করবেন। বিকেলে ওই এলাকার পুরোনো আদালতের মাঠে উঠান বৈঠকে অংশ নেবেন। ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন।

২০১১ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আট বছর মেয়রের দায়িত্বে ছিলাম এবং তখন থেকেই পটুয়াখালী পৌরসভায় আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছিল। আমার আমলে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন–ভাতাসহ ১০৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় ২৪০ কোটি টাকার প্রকল্প রেখে এসেছিলাম। পটুয়াখালী পৌরসভা ভৌগোলিক কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জেলায় পায়রা বন্দর, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও পর্যটন নগরী কুয়াকাটা রয়েছে। একদিন এই পৌরসভা সিটি করপোরেশনে পরিণত হবে। পৌরসভার উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করব।’

ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন বর্তমান মেয়র ও এই পদের প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার পৌরসভার নিউমার্কেট এলাকায়

বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত  মহিউদ্দি আহমেদ নিউমার্কেট, পাওয়ার হাউস রোড এলাকা এবং সবুজবাগ প্রথম ও দ্বিতীয় লেন এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছর পটুয়াখালী শহরকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করেছি। আমার হাত ধরে পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এখনো তিন-চার হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ বাকি রয়েছে।’ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই শহরে ১০ বছর পর কমপক্ষে ২৫ লাখ লোকের বসবাস হবে। সেটি মাথায় রেখেই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যদি আমি আরেকবার মেয়র নির্বাচিত হতে পারি, পটুয়াখালী শহরকে ঢেলে সাজানোর বিষয়টি এবং মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী পটুয়াখালীর উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারব।’

মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন এবার প্রথম পৌরসভার মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় তাঁর পোস্টার টানানো হয়েছে। আরেক প্রার্থী নাসির উদ্দিন খান নির্বাচনী প্রতীকসহ ইশতেহার–সংবলিত কাগজ ভোটারদের মধ্যে বিলি করছেন। অন্য প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের প্রচারণা নেই বললে চলে।

শত বছরের পুরোনো শহর পটুয়াখালী ১৮৯২ সালের ১ এপ্রিল পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৯ সালের ৫ আগস্ট এ পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। পৌরসভার আয়তন ৩০ বর্গকিলোমিটার, ভোটার ৫০ হাজার ৬৯৯ জন। পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৪১ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদে ১৫ জন প্রার্থী রয়েছেন।