সুধী সমাবেশে প্রথম আলোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে পরামর্শ ও প্রশ্ন করেন পাঠকেরা। তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে
সুধী সমাবেশে প্রথম আলোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে পরামর্শ ও প্রশ্ন করেন পাঠকেরা। তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে

‘পাঠককে গুরুত্ব দেয় বলে প্রথম আলো প্রথম’

প্রথম আলো সাধারণ মানুষের কথা বলে। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাঠককে গুরুত্ব দেয় বলে প্রথম আলো প্রথম। এমনকি যাঁরা প্রথম আলোকে নেতিবাচকভাবে দেখেন, তাঁরাও নিয়মিত প্রথম আলো পড়েন। খুলনায় সুধী সমাবেশে আসা অতিথিরা এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নারী নেত্রী, শিক্ষক, আইনজীবী, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি, সংবাদপত্রের এজেন্ট, হকার, বিজ্ঞাপনদাতাসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই সমাবেশে আসেন। তাঁরা প্রথম আলোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে পরামর্শ দেন, প্রশ্ন করেন। তাঁদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।

সুধীজনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘প্রথম আলো অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র, সুশাসনের কথা বলে। মানুষের অধিকার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়েই ২৪ বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল প্রথম আলো। শুরুতেই আমাদের সম্পাদক চাপের কাছে মাথা নত না করার অঙ্গীকার করেছিলেন। সেই অঙ্গীকার থেকে আমরা বিন্দুমাত্র সরে আসিনি। অঙ্গীকার বাস্তবায়নে প্রভাবশালী মহলের নানা ভয়ভীতি আর চাপের মধ্যেও প্রথম আলো কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের পাঠকদের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। কারণ, পাঠকই আমাদের সব সাহসের শক্তি।’

আনিসুল হক আরও বলেন, ‘আমরা করপোরেট নই। আমরা বাংলাদেশের জয় চাই। আমরা চাই, মানুষ এগিয়ে যাক। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অবিচল। আমরা কোথায় কোথায় সমস্যা আছে, সেটা বলে যাচ্ছি, যাতে সরকার সমাধানে উদ্যোগী হতে পারে। আমরা এভাবে সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই।’

সুধী সমাবেশে পাঠকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে

গতকাল বিকেল চারটায় প্রথম আলো বন্ধুসভা খুলনার সদস্য সঞ্চারিণী ব্যানার্জির কণ্ঠে ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ রবীন্দ্রসংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর খুলনার নিজস্ব প্রতিবেদক শেখ আল এহসান। পরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার প্রথম আলোর চর নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা বলেন, ‘আমি প্রথম আলোর একজন পাঠক। বর্তমানে বাংলাদেশে যে কটি পত্রিকা আছে, তাঁর মধ্যে প্রথম আলো অন্যতম। কারণ, প্রথম আলো সাধারণ মানুষের কথা বলে।’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও সমাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরতে বস্তুনিষ্ঠ সত্যকথনকে প্রথম আলো নিরলসভাবে প্রকাশ করে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শিক্ষাবিদ আনোয়ারুল কাদির বলেন, দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাঠককে গুরুত্ব দেয় বলেই প্রথম আলো প্রথম। প্রথম আলোর ৫০ লাখ পাঠক ভোরের প্রথম সূর্যের আলোর সঙ্গে প্রথম আলো পড়েন। তবে উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে, তরুণ প্রজন্ম কি ভোরের প্রথম সূর্য গায়ে মাখে? তরুণদের জাগিয়ে তুলতে প্রথম আলোকে আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অমিত রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, প্রথম আলোর গ্রহণযোগ্যতা কত শীর্ষে পৌঁছে গেছে। যাঁরা প্রথম আলোকে নেতিবাচকভাবে দেখেন, তাঁরাও নিয়মিত প্রথম আলো পড়েন। এমনকি দেশের বাইরে আমার পরিচিত শিশুরাও প্রথম আলো সম্পর্কে ধারণা রাখে।’

সুধী সমাবেশে প্রথম আলোর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন করছেন একজন পাঠক। মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে

প্রথম আলো বন্ধুসভা খুলনার সহসভাপতি তুহিন রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পাঠকদের প্রশ্নের উত্তর দেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, প্রথম আলোর খুলনার নিজস্ব প্রতিবেদক শেখ আল-এহসান ও খুলনা প্রতিনিধি উত্তম মণ্ডল। বন্ধুসভার সব সদস্য এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শেষে সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘সেই আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে’ দেখে আপ্লুত হন উপস্থিত সুধীজনেরা।