পাঠ্যবইয়ে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব সম্পর্কে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘নতুন বইয়ে বলা নেই বানর থেকে মানুষ হয়েছে। বরং বলা আছে, বানর থেকে মানুষ হয়েছে এ কথা ঠিক নয়। একবার নয়, তিনবার বলা আছে। বই নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন তোলা হলো, সব মনগড়া। কেন হঠাৎ করে নতুন শিক্ষার ওপর এই আগ্রাসন।’
আজ রোববার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুরের পিয়ার আলী কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বছরের প্রথম দিন আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে সব না হোক, বেশির ভাগ বই তুলে দিয়েছি। সেই বইগুলো নিয়ে একটা তুলকালাম কাণ্ড শুরু হয়ে গেল। একদম গেল গেল রব উঠে গেল, ইসলাম ধ্বংস হয়ে গেল। বাচ্চাদের বই কীভাবে ইসলাম ধ্বংস করে ফেলবে। যে ইসলাম রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ, সেই ধর্ম কীভাবে বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দিয়ে ধ্বংস করে দিতে পারে।’
নতুন শিক্ষাক্রমে কিছু ভুলত্রুটি নিয়ে সমালোচকদের উদ্দেশে দীপু মনি বলেন, ‘অপশক্তি দেখছে যে শেখ হাসিনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না, সেই অপশক্তি এখন বইয়ের ওপর সওয়ার হয়েছে। এবার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, সবাই খুব বই পড়ছেন। বই পড়ে পড়ে বইয়ের ভুল সব বের করছেন। আপনাদের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। যাঁরা পড়ছেন, আপনাদের এই প্রচেষ্টার ফলে আগামী দিনে বইগুলো সব নির্ভুল হবে।’
সক্ষমতার তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০০ জন জায়গা দেওয়ার সুযোগ থাকলে তাঁরা ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। পারলে ১৫০ জন ভর্তি করেন। তারপর আমাদের কাছে বলতে থাকেন আমার জায়গা নাই। আমরা জায়গা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রী ভর্তি করি না। ছাত্রছাত্রী বেশি ভর্তি করে তারপর জায়গা বাড়াতে চাই। এটা একটা সমস্যা।’
দেশে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব নেই উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে আসন প্রায় সাত লাখ খালি পড়ে থাকে। যে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুনাম হয়ে গেছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের চাপ থাকে, অভিভাবকদের চাপ থাকে, নেতাদের চাপ থাকে, আর শিক্ষকেরাও নিয়ে নেন। যদি তাঁরা একটু ভাবেন যে অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, সেগুলোতেও শিক্ষিত শিক্ষক আছে। সেখানেও অবকাঠামো আছে। কিন্তু আপনি বেশি শিক্ষার্থী নিচ্ছেন বলে ওই প্রতিষ্ঠান আবার চলছে না। একটু যদি সবাই নিজের সক্ষমতার মধ্যে থাকি, তাহলে সবার জন্যই ভালো।’
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইকবাল হোসেন। অতিথিদের বক্তব্য শেষে বিকেল পাঁচটায় বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গে কলেজে ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হয়।