কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে কলাতলী এলাকার ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মায়ের নাম সোমা দে (৩৫)। তাঁর দেড় বছর বয়সী মেয়ের নাম জানা যায়নি। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নিহত সোমা দে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বৈলগাঁও বানীগ্রামের জেবিন দের (৪২) স্ত্রী ও একই উপজেলার নাথপুরা গ্রামের শচীন্দ্র দের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে জেবিন দে দুই মেয়ে নিয়ে আত্মগোপন করেছেন। সোমা দে ও তাঁর মেয়ের লাশ কলাতলী হোটেল–মোটেল জোনের আবাসিক হোটেল সি আলিফের ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের লাশ খাটের পাশে পড়ে ছিল।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধে অথবা বিষপান করিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান চলছে। হোটেলকক্ষ থেকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সোমা দের স্বামী জেবিন দে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহের কথা জানিয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, নইলে দুই মেয়েসন্তান নিয়ে তিনি (জেবিন) আত্মগোপন করতেন না। জেবিনকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
সি আলিফ হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. ইসমাইল বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে তিন মেয়েসহ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলের ৪১১ নম্বর কক্ষে ওঠেন জেবিন দে ও সোমা দে। হোটেল রেজিস্টারে তাঁদের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বেলগাঁও এলাকার দীনেশ দত্ত মহাজনের বাড়ি।
সি আলিফ হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. ইসমাইল আরও বলেন, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁদের কক্ষ ছাড়ার কথা ছিল। সে হিসাবে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কর্মচারী শাখাওয়াত কক্ষে গিয়ে বেশ কয়েকবার কড়া নাড়েন। ভেতরে কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি বিকল্প চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখেন খাটের পাশে স্ত্রী ও মেয়েশিশুর মরদেহ পড়ে আছে। এরপর ঘটনা ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানানো হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, হোটেলের সিসিটিভি ক্যামরার ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিআইডিসহ পুলিশের একাধিক টিম।