শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

নিহত বুলবুলের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অন্তত এক শ ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছুরিকাঘাতে নিহত শিক্ষার্থী মো. বুলবুল আহমেদের (২২) পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা সহায়তার কথা জানিয়েছিলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থী এটি প্রত্যাখ্যান করে আজ বুধবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ সময় তাঁরা বুলবুলের পরিবারকে এককালীন ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার দাবি জানান।

এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, নিহত বুলবুলের পরিবারের সদস্যদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ লাখ টাকা তুলে দেবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্যাম্পাসের পর্যাপ্ত আলো ও সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়ে শিগগিরই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অন্তত এক শ ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘পাঁচ লাখের আশ্বাস, মানি না, মানব না; আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে সমাবেশ করে।

সমাবেশে বক্তব্য দেন লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আশ্রাফুল আলম। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বুলবুলের পরিবারকে মাত্র পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা এর সঙ্গে একমত পোষণ করতে পারছি না। আমাদের দাবি, প্রশাসন যেন এককালীন ৫০ লাখ টাকা দেয়। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বুলবুলের মাকে আমৃত্যু প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।’

সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে গাজী-কালু টিলা লাগোয়া ‘নিউজিল্যান্ড’ এলাকায় বুলবুল ছুরিকাহত হন। পরে তাঁকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাত পৌনে আটটার দিকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রাতেই সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন। হত্যার ঘটনায় পুলিশ তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

বুলবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার নন্দীপাড়া গ্রামে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। বুলবুলের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গত সোমবার রাত থেকে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিতে নানা ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।