রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে হামলার মুখে পালাতে গিয়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হন ৩০ জন। আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী নগরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম সাকিব আনজুম (২৭)। তাঁর বাবার নাম মইনুল হক। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের রানীনগর এলাকায়। তাঁর লাশ বিকেল চারটায় ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। এ ব্যাপারে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কয়েকজন আন্দোলনকারী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আজ বেলা ১১টার থেকে আন্দোলনকারীরা আগের দিনের মতো রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন। তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। একপর্যায়ে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজারের দিকে এগোতে থাকেন। তাঁরা ওই দিকে যাওয়ার পথে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে কার্যালয় দুটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। তাঁরা নগরের আলুপট্টি এলাকার কাছাকাছি এসে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। একপর্যায়ে সংঘর্ষ লাগে। এ সময় রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
পরে আন্দোলনকারীরা পিছু হটতে থাকেন। বেলা দেড়টার দিকে তাঁরা তালাইমারী-আলুপট্টি সড়ক ছেড়ে চলে যান। এ সময় আওয়ামী লীগের লোকজন ধাওয়া দিলে সাকিব আনজুম নগরের পঞ্চবটি এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা ওই বাড়িতে ঢুকেই সাকিবকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তাঁর কাছে থাকা ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখে স্থানীয় লোকজন তাঁর পরিচয় শনাক্ত করেন। বিকেল চারটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় ঘটনাস্থলেই লাশ পড়ে ছিল।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে এখনো তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না। নিহত ব্যক্তির বিষয়ে তিনি কিছু জানানে না।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে আহত ৪০ জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ। নিহত কারও লাশ হাসপাতালে আনা হয়নি।