রংপুরের বদরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ১৫ নেতা-কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশে বদরগঞ্জ থানায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর ওই মামলা করা হয়েছিল। গতকাল বিকেলে আওয়ামী লীগের ১৯ নেতা-কর্মী আত্মসমর্পণ করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে জামিন চান। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। আগের দিন বুধবার একই আদালতে ওই মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত দুই দিনে আটক আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক রেজাউল করিম (পান্না), বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মমতাজ হোসেন, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রশিদ, বদরগঞ্জ পৌরসভার বাজার পরিদর্শক রিয়াদ হোসেনসহ ১৫ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ও ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান রংপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আহসানুল হক (ডিউক চৌধুরী) ও বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র টুটুল চৌধুরীর নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় ১৫০ থেকে ২০০ জন ছাত্র-জনতা আহত হন। এ ছাড়া ওই দুই দিনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বদরগঞ্জ বাজারের দোকানপাট ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট, ৩৫টি মোটরসাইকেল, সরকারি ১টি পাজেরোতে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন। এতে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
ওই ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী নাগরিক ঐক্য কমিটির সদস্য বাদশাহ ওসমানী বাদী হয়ে আদালতে ১৬৩ জনকে আসামি করে ওই মামলা করেন। বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবীর ওই মামলায় দুই দিনে আদালতের নির্দেশে আওয়ামী লীগের ১৫ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।