চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মু. জিয়াউর রহমান ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে রহনপুরের মোহান্ত এস্টেটের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরে মোহান্ত এস্টেটের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এস্টেটের সেবায়েত ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারী এ অভিযোগ করেন। ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারী এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারী বলেন, একটি পার্ক স্থাপনের জন্য রহনপুর ইউনিয়নের গোপালপুর মৌজার মোহান্ত এস্টেটের দেবোত্তর সম্পত্তির ২২ বিঘা জমি সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিপন ও তাঁর ভাই মুকুট দখল করে নিয়েছেন। তাঁরাসহ তাঁদের সহযোগী শাহীন, এন্তাজ আলী ও পৌর কাউন্সিলর আবদুর রাজ্জাক প্রায় ১৫ দিন আগে রাতে রহনপুর মোহান্ত এস্টেটের অতিথি কক্ষে এসে পিস্তল দেখিয়ে জমিতে পার্ক করার অনুমতিপত্রে (স্ট্যাম্প) স্বাক্ষর করিয়ে নেন। তাঁরা মাতাল অবস্থায় থাকায় তিনি ভয়ে অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
ক্ষিতিশ চন্দ্র আচারী বলেন, ওই ঘটনার পরে তাঁর মেয়ের মাধ্যমে তাঁরা আপস-মীমাংসার প্রস্তাব দিলে তিনি আইনের আশ্রয় নেননি; কিন্তু তাঁরা কোনো আপস করেননি; বরং দখল করা জমিতে গাছ লাগিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ করছেন। পরে আইনের আশ্রয় নেবেন।
ক্ষিতিশ অভিযোগ করে বলেন, ‘এর আগে সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান আমার কাছ থেকে মোহান্ত এস্টেটের ১০ বিঘা জমি নিয়েছেন। এর আগের মেয়াদে নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোটা অঙ্কের টাকাও নিয়েছেন। আগের মেয়াদে আমি আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আবারও চাইতে পারি, এ জন্য জিয়াউর রহমান লোকজন দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ছাড়া আবদুর রাজ্জাককে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানি করছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। নির্বাচনের আগে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য কেউ আমার বিরুদ্ধে তাঁকে (ক্ষিতিশ) মাঠে নামিয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কাউন্সিলর আবদুর রাজ্জাক আমার ঘনিষ্ঠ লোক। ক্ষিতিশের সঙ্গেও তাঁর ভালো সম্পর্ক। আবদুর রাজ্জাক কোনো মামলা করেননি বলে জানি। দেবোত্তর সম্পত্তি নয়ছয় করার অভিযোগে ক্ষিতিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা আছে।’
১০ বিঘা জমি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য বলেন, ‘এর কোনো প্রমাণ তিনি দেখাতে পারবেন না। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’