বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের (ডাব প্রতীক) নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় কাহালু বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা এ হামলা করেছেন বলে হিরো আলম অভিযোগ করেছেন।
হিরো আলম তাৎক্ষণিকভাবে জেলা সদরের এরুলিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় ১৪-১৫ জন কর্মী-সমর্থক নিয়ে তিনি কাহালু বাজারে প্রচারণা চালাতে যান। এ সময় রমজান আলী নামে একজনের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থকেরা প্রচারণায় বাধা দেন। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হলে নৌকার সমর্থকেরা তাঁর ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান।
অভিযোগের বিষয়ে কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ বলেন, রমজান আলী আওয়ামী লীগের কেউ নন। জাসদের লোক হতে পারেন। কেন্দ্র থেকে জাসদের প্রার্থী রেজাউল করিমকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো করে নৌকার প্রচারণা চালাচ্ছে। জাসদের কেউ আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ওপর হামলা করলে কিংবা প্রচারণায় বাধা দিলে তার দায় দল নেবে না।
এর আগে গত শনিবার নন্দীগ্রাম উপজেলার মুরাদপুর বাজারে নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন হিরো আলম। গত বৃহস্পতিবার প্রচারণা শুরুর আগে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করেন হিরো আলম। এ সময় কাহালু-নন্দীগ্রামে প্রচারণার সময় যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে পুলিশ যেন সহযোগিতা করে, এ জন্য সহযোগিতা চান।
কাহালুতে হওয়া হামলার বিষয়ে হিরো আলম অভিযোগ করে বলেন, তিনি আগে থেকেই হামলার আশঙ্কা করেছিলেন। সেই কারণে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। কিন্তু তারপরও পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, ‘হিরো আলমের ওপর হামলার লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। হিরো আলম নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে কাহালুতে আসছেন, সেই তথ্য আগে থেকে থানা-পুলিশকেও জানাননি। হিরো আলম লিখিত অভিযোগ দিলে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, হলফনামাসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করাসহ নানা ত্রুটির কারণে ৩ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। এর তিন দিনের মাথায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন হিরো আলম। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোটারদের অনুরোধে নির্বাচনের মাঠে থেকে গেলাম। অনেকে মনে করেছেন, হিরো আলম টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। টাকা খেয়ে ভোটের মাঠ থেকে সরে যাচ্ছে। এসব ধারণা ভেঙে দেওয়ার জন্যই নির্বাচনের মাঠে আছি।’
এর আগে চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন হিরো আলম। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪-দলীয় জোটের শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান। এরপর ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।