ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর বসেছে পশুর হাট। শুক্রবার দুপুরে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ বাজার এলাকায়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর বসেছে পশুর হাট। শুক্রবার দুপুরে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ বাজার এলাকায়

সরাইলে আঞ্চলিক মহাসড়কে ইউপি চেয়ারম্যানের পশুর হাট, যানজটে ভোগান্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ এলাকায় আঞ্চলিক মহাসড়কে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়েছেন স্থানীয় কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ওই হাট বসানো হয়। দিনভর ওই হাট চলায় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ওই পথে চলাচলকারী গাড়ির চালক ও যাত্রীরা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কালীকচ্ছ ইউপির চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেন ২০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কালীকচ্ছ এলাকায় একটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর ইজারা নেন। মহাসড়কের ওপরে কিংবা পাশে হাট বসানো যাবে না, এই শর্তে প্রশাসন তাঁকে শনি ও রোববার হাট বসানোর অনুমতি দেয়। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান নির্ধারিত দিনের আগেই আজ মহাসড়ক দখল করে হাট বসান। এ ছাড়া ওই আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া গরু ব্যবসায়ীদের আটকে জোর করে হাটে গরু নামানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দুপুরে সরেজমিনে কালীকচ্ছ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর পশুর হাট বসানো হয়েছে। হাটে কয়েক হাজার গরু-মহিষ উঠেছে। এ সময় সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের দুই পাশে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার করে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী গাড়ির চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে।

পণ্যবাহী ট্রাকের এক চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাস্তার ওপর এভাবে পশুর হাট দিলে আমরা চলুম কেমনে?’ সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক যাত্রী বলেন, সড়কের মধ্যে হাট বসানোর কারণে তাঁদের আটকে থাকতে হচ্ছে। এতে তাঁরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

অস্থায়ী পশুর হাটে জোর করে গরু ব্যবসায়ীদের ধরে নিয়ে পশু রাখতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত হাসিল আদায়েরও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। সরেজমিনে গিয়ে কালীকচ্ছ ইউপির চেয়ারম্যান ছায়েদ হোসেনের লোকজনকে হাসিল আদায় করতে দেখা যায়। প্রতিটি গরু-মহিষ থেকে তাঁরা ৫০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত দুজন গরু ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা পশু নিয়ে উপজেলা সদরের দিকে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে তাঁদের আটকে জোর করে গরু রাখতে বাধ্য করা হয়েছে।

কালীকচ্ছ ইউপির চেয়ারম্যান ছয়েদ হোসেন বলেন, ‘৪০ হাজার টাকা খরচ করে আমরা বৃহস্পতিবার বাজারটি ইউএনওর (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) কাছ থেকে ইজারা নিয়েছি। তাই টাকা (হাসিল) আদায় করছি।’ মহাসড়ক দখলের বিষয়ে বলেন, নির্ধারিত স্থানে গরু রাখার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সড়কের পাশে গরু রাখতে হয়েছে।

সরাইলের ইউএনও মেসবা উল আলম ভূঁইয়া দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের ওপর কাউকে পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁরা ২০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে অস্থায়ী হাটের ইজারা নিয়েছেন। শর্ত ছিল সড়কের ওপরে কিংবা সড়কের পাশে হাট বসবে না। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।