গণসমাবেশ ঘিরে রাজশাহীতে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

বিএনপির গণসমাবেশ উপলক্ষে আগেই রাজশাহীতে এসে অবস্থান নিয়েছেন দলটির বিভিন্ন জেলা–উপজেলার নেতা–কর্মীরা। আজ বুধবার নগরের মালোপাড়ায় বিএনপির কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা থেকে ১৫ জন নিয়ে এসেছেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনিছ সিকদার। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁরা রাজশাহীতে পৌঁছান। থাকছেন বিএনপির নগরের মালোপাড়া কার্যালয়ে।

আনিছ সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, চৌহালী থানায় তিনিসহ ১২০ জনের নামে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের ভয় ও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আগেই রাজশাহীতে এসেছেন।

রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশ উপলক্ষে এভাবে বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দলটির নেতা-কর্মীরা এসে রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। তাঁদের অনেকে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন।

আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরের মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই সমাবেশের আগে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক সমিতি।

বিএনপির নেতারা বলছেন, সরকার পরিবহন মালিক সমিতিকে ব্যবহার করে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে সমাবেশে মানুষজনের আসা বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে। তবে পরিবহন মালিক সমিতি বলছে, এটা তাঁদের ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ।

চৌহালী থেকে আসা ১৫ জনের মধ্যে উপজেলার উমারপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আবদুল কাদের মোল্লাও এসেছেন। তিনি বলেন, চৌহালী থানার বেশির ভাগ চর এলাকা। সেখান থেকে সোমবার রাতে নৌকায় করে নদী পার হয়ে ভ্যানে এসেছেন সিরাজগঞ্জ শহরে। এরপর সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি পত্রিকার গাড়িতে গতকাল রাজশাহীতে পৌঁছান। থাকার জায়গা নেই, নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বিএনপির কার্যালয়ে উঠেছেন।

রাজশাহী নগরের মালোপাড়ায় বিএনপির কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া দলটির নেতা–কর্মীরা

এই দলের সঙ্গে থাকা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আরিফ সরকার বলেন, দুই দিন ধরে এখানে আছেন। আজকের মধ্যে দূরের উপজেলাগুলোর সবাই পৌঁছে যাবেন।

বিএনপির মালোপাড়া কার্যালয়ের বারান্দায় বসেছিলেন ৮-১০ জন। তাঁদের বেশির ভাগের বয়স ৫০ বছরের বেশি। এই দলে এসেছেন ১৬ জন। তাঁরা এসেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে।

সেখানে থাকা শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ ভোরে গাড়িতে করে রওনা দেন। সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহীতে পৌঁছে সোজা বিএনপির কার্যালয়ে চলে এসেছেন। থাকার জায়গা নেই, তাই পার্টি অফিসে উঠেছেন। পরিবহন ধর্মঘটের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আগে বিরোধী দল হরতাল-অবরোধ-ধর্মঘট ডাকত, এখন সরকার ধর্মঘট ডাকে। এই সরকার গণবিরোধী কাজ করছে। বেশি দিন টিকবে না।

শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি রহিজ উদ্দিন মণ্ডল দুবিলা গ্রাম থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, তাঁর এলাকা থেকে কয়েক শ মানুষ আসবেন রাজশাহীতে। তাঁদের অনেকে রাস্তায় আছেন। তাঁরা রাতের মধ্যে পৌঁছে যাবেন। পথে বাধা পেলে হেঁটে আসবেন।

চিড়া-গুড় নিয়ে এসেছেন একই ইউনিয়নের বিএনপি কর্মী মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের খাবারের ব্যবস্থা আমরা নিজেরাই করেছি। চিড়া-গুড় নিয়ে এসেছি। এই সরকারের পতন ছাড়া দেশের মানুষের শান্তি আসবে না।’

এ বিষয়ে কথা হয় রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার ওরফে দুলুর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মানুষজনকে কোনোভাবেই আটকে রাখা যাবে না। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আজ থেকে নেতা-কর্মীরা আসা শুরু করেছেন। তাঁরা অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।