পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার হিন্দুপাড়াগুলোতে রাত জেগে পাহারা চলছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর স্থানীয়ভাবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৫ আগস্ট বিকেলে প্রথম হামলা হয় কলাপাড়া পৌর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের বাড়িতে। ওই দিন তাঁর ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত অতর্কিতে এসে তাঁর বাড়িতে হামলা করে। এতে অনুষ্ঠানস্থলের সাজানো প্যান্ডেল লন্ডভন্ড হয়ে যায়। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তদের ১০-১২ জন তাঁর বসতঘরে ঢুকে পড়ে। ঘরের প্রতিটি কক্ষের আলমারি ভেঙে টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। ভাঙচুর করে ঘরের আসবাব। দুর্বৃত্তদের কয়েকজন তাঁর ছেলের ব্যবহার করা গাড়িটি পুড়িয়ে দেয়।
একই দিন কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অনন্ত মুখার্জির বসতবাড়ি এবং তাঁর বাড়ির পাশের একটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকায় রাতের বেলায় নিজেদের উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলাপাড়া পৌর শহরের চিংগড়িয়া, আখড়াবাড়ি, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা ও কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্র এলাকায় পাহারা দেওয়া হচ্ছে।
হিন্দু ও রাখাইন সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে কেউ যাতে হামলা না করে, সে জন্য বিএনপি উদ্যোগ নেয়। উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের গোড়া আমখোলা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা থয়মন সে বলেন, ‘আমরা ভয়ে ছিলাম। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পাশে দাঁড়ানোর ফলে ভয় কেটে গেছে। এখন নিরাপদ মনে করছি।’
কলাপাড়া পৌর শহরের আক্রাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বিকাশ হাওলাদার বলেন, ‘সুযোগসন্ধানী মানুষের অভাব নেই। ক্ষমতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতকারীরা লুটপাট, অরাজকতা শুরু করে, এটা সব সময়ই দেখে আসছি। এ কারণে আমরা কিছুটা হলেও আতঙ্কিত। রাতের আঁধারে কেউ যাতে আমাদের বাড়িঘরে ঢুকতে না পরে, সে জন্য রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।’
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ জনসেবায় ২৬ ধরনের কাজ করে থাকে। এসব কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এটা ঠিক আমরা জনগণের জন্য আগে যেভাবে সেবা দিয়েছি, চলমান পরিস্থিতির পর আমরা এখনো মাঠে সেভাবে নামতে পারিনি। তবে আমরা কাজগুলো শুরু করেছি।’