নিজ নামে ফাউন্ডেশন গড়ার ঘোষণা হিরো আলমের

ভোটের পর কাহালু ও নন্দীগ্রামে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করেন হিরো আলম। গত শুক্রবার দুপুরে বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মানবতার সেবায় এবার নিজ নামে ফাউন্ডেশন গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। হবিগঞ্জের একজন শিক্ষকের কাছ থেকে উপহার পাওয়া মাইক্রোবাসটিকে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে গরিব মানুষের সেবা দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু করতে চান তিনি।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এসব কথা জানিয়ে হিরো আলম বলেন, তাঁর ফাউন্ডেশনের নাম হবে ‘হিরো আলম ফাউন্ডেশন’।

হিরো আলমকে গাড়ি উপহার দেওয়া এম মখলিছুর রহমান হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের হাজি আবদুল জব্বার জিএল একাডেমি অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক।

গত ৩১ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে এসে তিনি হিরো আলমকে নিজের ব্যবহৃত নোহা মাইক্রোবাসটি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন।

হিরো আলমকে উপহার হস্তান্তর উপলক্ষে শিক্ষক মখলিছুর রহমানের বাড়ির সামনে বানানো হয় একটি মঞ্চ। আজ বেলা তিনটায় হিরো আলম নরপতি গ্রামে গিয়ে গাড়িটি গ্রহণ করেন।

হিরো আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে দুটি আসন (বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ নির্বাচনী) থেকে উপনির্বাচন করেছি, সেখানকার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে গাড়িটি ব্যবহার করতে চাই। মাইক্রোবাসটি অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে ২৪ ঘণ্টা মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। নির্দিষ্ট মুঠোফোন নম্বরে ফোন করলেই পৌঁছে যাবে এই অ্যাম্বুলেন্স। এলাকার হতদরিদ্র মানুষ বিনা মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাবেন। এর মধ্য দিয়ে মানবতার সেবায় যাত্রা শুরু হবে “হিরো আলম ফাউন্ডেশন”–এর।’

এ ফাউন্ডেশনের অর্থ কোথা থেকে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকে মানবতার সেবায় বিভিন্ন জেলায় নানা কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। সিলেটে বন্যার সময় সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি, বগুড়ায় ত্রাণ কার্যক্রম ছাড়াও ঈদে গরিব মানুষের মাঝে উপহারসামগ্রী বিতরণ করেছি। এখন “হিরো আলম ফাউন্ডেশন”–এর মাধ্যমে বড় পরিসরে মানবতার সেবায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই। বিশেষ করে কাহালু-নন্দীগ্রাম এবং বগুড়া সদরের সর্বস্তরের মানুষ যেভাবে ভোট দিয়ে আমার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তাঁদের কাছে আমি ঋণী। এই এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।’

উপহারের গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্সে রূপান্তর করতে ও কাগজপত্র ঠিক করতে অনেক টাকার প্রয়োজন জানিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে একজন দক্ষ চালক ও একজন সহকারী দরকার। ফাউন্ডেশন চালানোর মতো সামর্থ্য ও অর্থ হয়তো আমার কাছে নেই। তবে দেশ–বিদেশে অনেক ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বিত্তবান মানুষ আছেন, যাঁরা মানবতার সেবায় অর্থ খরচ করতে চান। তাঁদের আহ্বান জানাব মানবিক এই উদ্যোগে আমার পাশে থাকার জন্য।’

হিরো আলম ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪–দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি।

এরপর হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোটের ফলাফলে কারচুপি করে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএমের ভোটের প্রিন্ট কপি ও ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনা চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদনও করেন হিরো আলম।